ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এইচ৫এন১ ভাইরাস বা বার্ড ফ্লু। এতে হাঁস-মুরগি খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন স্থানীয়রা। সংক্রমিত এলাকার এক কিলোমিটারের মধ্যে সব ধরনের পোষা পাখি মেরে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মুরগির মাংস ‘আপাতত’ না খাওয়া উচিত। এতে তেমন ক্ষতি হবে না। বরং রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমবে।
এভিয়েন ইনফ্লুয়েঞ্জা বা সাধারণভাবে পরিচিত বার্ড ফ্লু মূলত পাখিদের রোগ। এইচ৫এন৮ নামের একটি ভাইরাস এই রোগের জন্য দায়ী। আক্রান্ত পাখির মাংস ও ডিম পরিপূর্ণভাবে সেদ্ধ না করে খেলে মানুষেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে, তবে পাখি থেকে সরাসরি মানবদেহে এই ভাইরাসের সংক্রমণ সাধারণত ঘটে না।
ভারতের রাজেন্দ্র ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সের (রিমস) মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান ড. অশোক কুমার শর্মা ভারতের দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘এটা সত্য যে বার্ড ফ্লু ভাইরাস তাপ সহ্য করতে পারে না এবং আক্রান্ত পাখির মাংস বা ডিম যদি পূর্ণরূপে সেদ্ধ করা হয়, তাহলে তা সম্পূর্ণ নিরাপদ। কিন্তু সম্প্রতি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কয়েকজন জীবিত পাখি থেকে সরাসরি এই ভাইরাসটির সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। লোকজন যদি সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য মুরগি-হাঁসের মাংস ও ডিম খাওয়া বন্ধ রাখেন, সেক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই।’
ভারতের রিমসের সোশ্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. দেবেশ কুমার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘মানুষ ও পশুপাখির ইনফ্লুয়েঞ্জার জন্য দায়ী ভাইরাসগুলো ‘প্রবাহ ও স্থানান্তর’ নীতি মেনে চলে। ফলে দ্রুত ও সহজেই এই ভাইরাসগুলোর মিউটেশন ঘটে এবং এই প্রক্রিয়ার কারণে ভাইরাসগুলো যে কোনো সময় মানবদেহে সংক্রণ করার ক্ষমতাও অর্জন করতে পারে— এটা মোটেও অস্বাভাবিক নয়।’
তিনি বলেন, প্রতিকারের যে প্রতিরোধ সবসময়ই উত্তম। এ কারণে মাংস-ডিম খাওয়ায় বিরতির পাশাপাশি দেশের পোলট্রি খামারগুলোতে নজরদারি বাড়ানোও জরুরি।