fbpx

ইউটিউবে ভিউ বাড়াতে সারারাত কবরে, দুই ভাই আটক

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ার জামানায় মানুষ এখন ভাসছে ভিউ আর রিচ বাড়ানোর ট্রেন্ডে। ফেসবুক কিংবা ইউটিউবে ভিউ বাড়াতে মজাদার সব কাজ করছে। কেউ আবার উল্টো পথেও হাঁটছে। অর্থাৎ ভয়ঙ্কর কিছু করতেও দ্বিধা করছে না।

ইউটিউবে ভিউ বাড়াতে ঠিক এমনই এক পথ খুঁজে নিয়েছেন বগুড়ার দুই ভাই। কবর নিয়ে সবার মাঝেই এক ধরনের রহস্য কাজ করে। কবরের ভেতর নাকি অনেক কিছুই ঘটে, যা নিয়ে সাধারণ মানুষের কৌতূহলের অন্ত নেই। এই রহস্যজনক ভিডিও ধারণ করতে তাই নিজের বাড়ির উঠানে কবর খুঁড়ে সারারাত কাটিয়েছেন মিজানুর রহমান (২৩) নামের ওই যুবক। আর কবরের অভিজ্ঞতার ভিডিও ধারণের কাজে সহযোগিতা করেছেন তার বড় ভাই আবু হাসান। এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে সোমবার সকালে এই দুই তরুণকে আটক করেছে পুলিশ।

এই দুই যুবক বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের বাসিন্দা। মিজানুর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা ইন প্রকৌশল পাস করেছেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির প্রস্ততি নিচ্ছেন। বড় ভাই আবু হাসান বগুড়া সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে ডিপ্লোমা করেছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে যানা যায়, মিজানুর রহমান লেখাপড়ার পাশাপাশি ইউটিউবের জন্য ভিডিও নির্মাণ করেন। তিনি বিভিন্ন কনটেন্টের ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবে আপলোড করতেন। এছাড়া হেঁটে দেশ ভ্রমণের বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে তিনি বেশ আলোচিত।

দুই ভাইকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শাজাহানপুর থানা–পুলিশ জানিয়েছে, ইউটিউব চ্যানেলে ভিউ বাড়াতে মৃত্যুর পর মানুষের কবরে কী ঘটে, সেই ভিডিও ধারণের সিদ্ধান্ত নেন মিজানুর রহমান। বড় ভাই আবু হাসান তাকে সহযোগিতা করতে রাজি হন।

স্থানীয়রা জানান, কবরে গুপ্তধন পাওয়ার কাহিনী বলে পরিবারের সদস্যদের কবর খুঁড়তে সহযোগিতা নেন। রবিবার সন্ধ্যায় বাড়ির উঠানে কবর খোঁড়া হয়। রাত ১১টার দিকে মিজানুর রহমান সেই কবরে প্রবেশ করেন। ভিডিও ধারণের জন্য সঙ্গে নেন ক্যামেরা। অন্ধকার কবর থেকে যোগাযোগ করতে তারের মাধ্যমে বৈদ্যুতিক সংযোগ ও বাল্ব নেন। প্লাস্টিকের পাইপের মাধ্যমে ভেতরে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। গরম থেকে রক্ষা পেতে সঙ্গে নেন বৈদ্যুতিক ফ্যান। এছাড়া মোবাইল, চার্জার, জুস ও পানিও  নেন। এরপর কবরে মাটিচাপা দেওয়া হয়। রাতে ভেতরে অবস্থান নেওয়া মিজানুর সেখানকার ভিডিও ধারণ করেন। বর্ণনা দেন সেখানকার পরিস্থিতির। আর বড় ভাই আবু হাসান আরেকটি ক্যামেরা নিয়ে বাইরের দৃশ্য ধারণ করেন। পাইপের মাধ্যমে এবং মোবাইলে দুই ভাই কথাবার্তা চালিয়ে যান।

শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, সকালেও মিজানুর কবরের ভেতরেই ছিলেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে বাড়িতে স্থানীয় লোকজন ভিড় করেন। একপর্যায়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তুলে একজন প্রতিবেশী থানা–পুলিশে অভিযোগ করেন। সকাল নয়টার দিকে পুলিশ সেখানে গিয়ে কবরের ভেতর থেকে মিজানুর রহমান এবং বাইরে থেকে আবু হাসানকে আটক করে।

ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই ভাই স্বীকার করেছেন, কবরের ভেতরের রহস্য নিয়ে ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরির জন্যই তারা এটা করেছেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply