fbpx

এফডিসি বনাম মিডিয়ার নির্মাতা, কেনো এই বিভাজন?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বিভাজন রেখাটা কে, কবে‌, কীভাবে টেনে দিয়েছিল সেটা কেউ বলতে পারে না। তবে এটা খুব জোর দিয়ে বলাই যায় এফডিসি কেন্দ্রিক সিনেমা আর এফডিসির বাইরে থেকে নির্মিত সিনেমার মধ্যে একটা অদৃশ্য বিভাজন রয়েই গেছে।

সম্প্রতি মেজবাউর রহমান সুমনের ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর পুরনো ইস্যু নতুন করে আবার প্রাণ পেয়েছে। এফডিসির অনেক নির্মাতা ও শিল্পীরা আকার ইঙ্গিতে বলার চেষ্টা করছেন সুমন ‘মিডিয়ার’ নির্মাতা তার সিনেমা নাটক হয়েছে, সিনেমা নয়!

এই অভিযোগ নতুন নয়, এর আগেও ছিল… হুমায়ুন আহমেদ, মোস্তফা সরয়ার ফারুকি, গিয়াস উদ্দিন সেলিম, গোলাম সোহরাব দোদুল, মোস্তফা কামাল রাজ, রেদওয়ান রনি, চয়নিকা চৌধুরীসহ মিডিয়া থেকে আসা আরো অনেক নির্মাতার বিরুদ্ধেই। কিন্তু কেন এই বিভাজন? মিডিয়ার নির্মাতা আর এফডিসির নির্মাতা বলে আলাদা কোনো টার্ম আছে কি ফিল্মি অভিধানে?

এ বিষয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘যারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন তারা জেনে বুঝেই সিনেমা নির্মাণ করছেন। এটা নাটক হয়ে গেছে বা এটা সিনেমা হয়েছে এভাবে ভাবার কোন কারণই নেই। আর আমি ‘পরান’, ‘হাওয়া’ সিনেমা দেখেছি। খুবই ভালো সিনেমা হয়েছে। হাওয়ার কথা আলাদা করে বলবো এ কারণে যে, একটা জাহাজে পুরো সিনেমার শুটিং হয়েছে। এইটুকু জায়গায় এত সুন্দর সিনোম্যাটোগ্রাফি, অভিনেতাদের হ্যান্ডেল করা, সুন্দরভাবে গল্পকে উপস্থাপন করা এত সহজ নয় যা করে দেখিয়েছে মেজবাউর রহমান সুমন।‘

একটা সময় ছিল যখন মূলধারা আর বিকল্প ধারা বলে দুটি ভাগে ভাগ করা হতো সিনেমা ও নির্মাতাদের। সেই দূরুত্বের পথ কিছুটা কমলেও কাকরাইল পাড়া আর নিকেতন মিডিয়া পল্লীর মধ্যে দূরুত্বটা রয়েই গেছে। এই দূরত্ব কমানোর কোনো উপায় কি আছে? দিন শেষে ক্ষতিটা কার হচ্ছে? সিনেমার না ব্যক্তির?

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরী বলেন, ‘আমি মেজবাউর রহমান সুমনের আগে যে টেলিফিল্মগুলো দেখেছি সেগুলোও সিনেমার মতই ছিলো। আর যারা নাটক নির্মান থেকে সিনেমা নির্মাণে আসছেন তাদের অনেকের কাজই তো ভালো। গিয়াস উদ্দিন সেলিম, দীপঙ্কর দীপনসহ আরও অনেকেই ভালো সিনেমা নির্মাণ করেছেন। যারা বলছেন, নাটক নির্মান থেকে যারা সিনেমা নির্মাণে আসছেন তাদের সিনেমা নাটকের মত হয়ে যাচ্ছে তারা ভুল কথা বলছেন।

একে একে যখন দেশের সিনেমা হলগুলোর দরজা বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো, সিনেমার ব্যবসা নিয়ে যখন হতাশ দেশিয় প্রযোজকরা, তখন আশার আলো হয়ে দেখা দেয় পরাণ, হাওয়া বা দিন দ্য ডে। কিন্তু একই ইন্ডাস্ট্রির এই দৈত রূপ দেখে হতাশা বাড়ে সিনেমা লগ্নিকারীদের মাঝে। দর্শকের মনেও বিরুপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কেন এফডিসি কেন্দ্রিক নির্মাতারা সহজেই গ্রহণ করতে পারেন না এফডিসির বাইরের নির্মাতাদের, আর কেনই বা এফডিসি থেকে দূরে দূরে থাকেন মিডিয়া তকমাধারী নির্মাতারা? চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন ব্যক্তিগত ঈর্ষা আর ইগোই মূল কারণ।

মূলত, মেজবাউর রহমান সুমনকে নিয়ে নতুন করে আবার আলোচনাটা সামনে এলো। তিনি বলেন, কোনটি নাটক হয়ে যাচ্ছে আর কোনটি সিনেমা সেটা নিয়ে যদি কথা বলা হয় তাহলে বিশ্বের সেরা অনেক সিনেমাকেই খারিজ করে দিতে হবে। এ বিষয়ে আসলে কথা বলতেও চাই না।

‘হাওয়া’ সিনেমা নিয়ে যে নকলের অভিযোগ উঠেছে, তাতে অপমানিত বোধ করেছেন সুমন। তিনি বলেন, ‘একজন নির্মাতার জন্য এই অপবাদ খুবই অপমানের। আমরা আগেই বলেছি, আমরা এই অঞ্চলের মানুষের গল্প বলতে চেয়েছি। বিভিন্ন দেশের, জাতির মিথোলজির মিল পাওয়া যায়। তাহলে আমরা কি বলতে পারি ইউরোপিয়ান মিথোলজি থেকে এই সাব-কন্টিন্যান্টের মিথোলজি কপি করা? আমি চেয়েছি আমার সিনেমা দেখে সবাই সমালোচনা করুন, বাট আমার আইডিয়া, নির্মাণ নিয়েই যদি প্রশ্ন তোলা হয় তাহলে মনেই হয়, কোন একটা বিশেষ গ্রুপ এগুলো ইচ্ছে করেই রটাচ্ছে।‘

অনেকদিন বাদে বাংলা সিনেমার পালে লেগেছে হাওয়া, বাংলা সিনেমার দর্শক কবে এমন হুমড়ি খেয়ে পড়েছে সিনেমা হলে? মনে করতে পারেন? বলা যায় রেভ্যুলেশন ঘটেছে। কষ্ট করে ধরে রাখতে হবে এই ধারাবাহিকতা। কিন্তু এসব সুন্দর ব্যাপারকে একপেশে করে যারা সিনেমা কপি করা, সিনেমা নাটক হয়ে গেছে এসব তর্কে যান, সেটা কী একটু দ্বন্দ্বে ফেলে দেয় না আমাদের?

https://www.facebook.com/eveningshow.bbs/videos/569144234707032

Advertisement
Share.

Leave A Reply