বর্তমান সময়ে গোটা বিশ্বজুড়ে নতুন করে মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওমিক্রন। এর মাঝেই বছরঘুরে দুয়ারে এসেছে ক্রিসমাস বা বড়দিন। এই দিনকে ঘিরে ইউরোপের ব্যবসায়ীরা যে পরিমাণ বেচাকেনার আশা করেছিলেন, তা অনেকটাই নিরাশায় পরিণত হয়েছে।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির কারণে মার্কিন নাগরিকরা তাদের খরচ কমিয়ে এনেছেন। সেজন্য বড়দিনেও উপহার ক্রয় বাবদ খরচও কমিয়ে আনছেন তারা। নিম্ন আয়ের ভোক্তাদের জন্য কেনাকাটা অনেকটা দুরূহ হয়ে উঠছে।
অথচ এই সময়ে ব্যবসায়ীরা বেশি কেনাবেচার আশা করে থাকেন। আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় সর্বোচ্চ বিক্রয়ের আশা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের খুচরা বিক্রেতাদের। ৩৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতির ধাক্কা এই শ্রেণীর ভোক্তাদের জন্য অনেকটা কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। সিএনবিসির খবরে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
মার্কিন সরকারের এক প্রতিবেদন বলছে, গত এক বছরে ভোক্তামূল্য সূচক বেড়েছে ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। এ সময় খাদ্য, জ্বালানি, আবাসন, যানবাহন ও পোশাকের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে। দ্রব্যমূল্যের এমন ঊর্ধ্বগতি অনেক আমেরিকান নাগরিকের জীবন যাত্রায় পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
আমেরিকাস রিসার্চ গ্রুপের চেয়ারম্যান সি ব্রিট বিমার বলেন, মূল্যস্ফীতি নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর জন্য শোচনীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এমন পরিস্থিতি তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে দ্বিধায় ফেলে দিয়েছে। তারা খাদ্যের জন্য কতটুকু ব্যয় করবে, আর কেনাকাটার জন্য কতটুকু ব্যয় করবে।
এক বছরের ব্যবধানে নিম্ন আয়ের পরিবারগুলোর উপহার বাবদ কেনাকাটার ব্যয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ইংল্যান্ডের অবস্থাও একই রকম। সেখানে ওমিক্রন সবাইকে নাকানিচুবানি খাওয়াচ্ছে। দেশটিতে এখন দৈনিক সংক্রমণ লাখের কাছাকাছি চলে গেছে। ফলে বড়দিনের শেষ মুহূর্তেও কোনাকাটায় ভাটা পড়েছে। বড় বড় বিপণী বিতানে মানুষের আনাগোনা প্রাক- মহামারি সময়ের তুলনায় এক-পঞ্চমাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট।
নিউ ওয়েস্ট এন্ড কোম্পানির জরিপে দেখা গেছে, দেশটির প্রাণকেন্দ্র ওয়েস্ট এন্ডে এই শনিবার ও রবিবার মানুষের যাতায়াত আগের সপ্তাহন্তের তুলনায় পাঁচ শতাংশ কমেছে। আর দুই বছর আগের একই সময়ের তুলনায় ক্রেতাদের আনাগোনা কমেছে ২৯ শতাংশ।
তবে সেখানে এখনও ব্রিটিশ সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করে নি।কিন্তু তার আগেই মানুষ যেভাবে সতর্ক হয়ে উঠছে তাতে বোঝা যায়, তাদের মনে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বড় দিনের ব্যবসার জন্য মুখিয়ে ছিলেন। কিন্তু এই ব্যবসায় ভাটা পড়ায় তারা আবার নতুন করে প্রণোদনার জন্য মুখিয়ে উঠেছেন।