fbpx

কল ড্রপ হলেই টকটাইম ফেরত পাবে গ্রাহক

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

এখন থেকে মোবাইলে কথা বলার সময় কল ড্রপ হলেই গ্রাহকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে, মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আগামী ১ অক্টোবর থেকে এ নির্দেশনা কার্যকর হবে।

সোমবার রাজধানীর রমনায় মোবাইলে কলড্রপ, কলড্রপ সংক্রান্ত তথ্যাদি এবং গ্রাহককে টকটাইম ফেরত প্রদানের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণ প্রদান বিষয়ে বিটিআরসি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার অনলাইনে যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, মোবাইলের কল ড্রপ বন্ধসহ নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল সেবা নিশ্চিত করতে সরকার বন্ধপরিকর। তিনি বলেন গ্রাহকগণ অর্থের বিনিময়ে যে সেবা গ্রহণ করেন তার পুরোটা পাওয়ার অধিকার তাদের আছে।

অন্যদিকে কলড্রপের ক্ষতিপূরণ যাতে অপারেটরদেকে দিতে না হয় সেজন্য অবশ্যই অবকাঠামোর যথাযথ উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যমান হাজার হাজার বিটিএস সাইটে ধারণ ক্ষমতার বেশি গ্রাহক বৃদ্ধির প্রবণতা বন্ধ করে অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে সুস্থ্য ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতায় মোবাইল অপারেটরসমূহকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান মন্ত্রী।

মোস্তাফা জব্বার বলেন, একদেশ একরেট পদ্ধতিতে আমরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ডাটারেট নির্ধারণ করেছি মোবাইল ডাটা রেট নির্ধারণের লক্ষ্যে আমরা কাজ শুরু করেছি। তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে আমরা ডাটা ড্রপের বিষয়টিও ক্ষতিপূরণের আওতায় আনবো।

তিনি অপারেটরদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা অবকাঠামো উন্নত করলে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। ক্ষতিপূরণ যাতে দিতে না হয় অবশ্যই আপনাদের সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে- সেবার গুণগতমান বাড়াতেই হবে। তিনি বলেন, কলড্রপের জন্য টাকা ফেরত চাইনা, ভাল সেবা দিন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।

বিটিআরসির সিস্টেমস অ্যান্ড সার্ভিসেস বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ নতুন নির্দেশিকার বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন। সেখানে বলা হয়, গ্রাহক এখন থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় কল ড্রপের ক্ষেত্রে প্রতিটি কল ড্রপের জন্য ৩০ সেকেন্ড এবং তৃতীয় থেকে সপ্তম কল ড্রপের বেলায় প্রতিটি কল ড্রপের জন্য ৪০ সেকেন্ড টকটাইম ফেরত পাবেন। ফেরত পাওয়া টকটাইম পরের দিন থেকে ব্যবহার করা যাবে এবং এই টকটাইম শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহকের কোনো টাকা কাটা যাবে না। কল ড্রপের ক্ষতিপূরণের বিষয়ে গ্রাহককে এসএমএসের মাধ্যমে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জানাতে হবে। কোনো অপারেটর চাইলে কল ড্রপ হওয়ার দিন থেকে ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে। কল ড্রপের ফেরত প্রাপ্ত টকটাইমের মেয়াদ হবে ১৫ দিন। বিটিআরসি বলেছে, ১০০ সেকেন্ড কল ড্রপের জন্য অপারেটররা ৩০৯ দশমিক ৪৪ সেকেন্ড ক্ষতিপূরণ দেবে।

যেকোনো অপারেটরের গ্রাহক এখন থেকে *১২১*৭৬৫# কোডের মাধ্যমে তার কল ড্রপের পরিমাণ জানতে পারবে। আগামী অক্টোবর থেকে এটা কার্যকর হবে।

গ্রামীণফোন ও রবি তৃতীয় থেকে সপ্তম কল ড্রপ পর্যন্ত গ্রাহককে ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। অন্যদিকে বাংলালিংক দ্বিতীয় থেকে ষষ্ঠ কল ড্রপ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেয় বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।

তিনটি অপারেটর থেকে তথ্য নিয়ে কল ড্রপের পরিমাণ বিশ্লেষণ করে বিটিআরসি জানিয়েছে, গত মে মাসে বিভাগ অনুসারে গ্রামীণফোনের কল ড্রপের পরিমাণ ছিল শূন্য দশমিক ৭২ শতাংশ, রবির ১ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং বাংলালিংকের শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ।

বিটিআরসি বলেছে, ১ থেকে ৭ বার পর্যন্ত কল ড্রপের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি ৯৮ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং একবার কল ড্রপের পরিমাণ ৬৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ। ১ থেকে ৭ বার কল ড্রপ গ্রামীণফোনে সবচেয়ে বেশি এবং একবার কল ড্রপ বাংলালিংকে বেশি হয়।

কল ড্রপের বিষয়ে টেলিটকের কোনো তথ্য জানায়নি বিটিআরসি। তাদের কাছ থেকে পরে তথ্য সংগ্রহ করা হবে বলে জানানো হয়।

বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, নতুন নির্দেশনা টেলিটকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সরকারি এই অপারেটরদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ঘাটতি আছে। তাদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটু সময় দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া সক্ষমতার তুলনায় কিছু কিছু এলাকায় গ্রাহক বেশি হওয়ায় কল ড্রপ বেশি হচ্ছে উল্লেখ করে সেসব জায়গায় সক্ষমতা বাড়াতে অপারেটরদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

নতুন এই নির্দেশনা শুধু একই অপারেটরের মধ্যে কল ড্রপের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অন্য অপারেটরে ভয়েস কলের ক্ষেত্রে তিনটি পক্ষ কাজ করে। কল ড্রপের জন্য কোন পক্ষ দায়ী, তা খুঁজে বের করে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে বিটিআরসি কাজ করছে , সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply