করোনা মহামারী ভোগাচ্ছে পুরো পৃথিবীকে। দিকে দিকে মৃত্যু মিছিল। শক্তিশালী অর্থনীতির দেশগুলোও ব্যর্থ। মানুষ বাঁচাতে পারছে না কেউই। প্রার্থনাই যেন দু:সময়ে একমাত্র করণীয়। এ পরিস্থিতিতে একটি ভিন্ন প্রচেষ্টা চোখে পড়ছে ইউরোপের চেক প্রজাতন্ত্রে।
সে দেশের পর্বতঘেরা এক গ্রাম ক্লিনি। সেখানে একটি শিপিং কনটেইনারের ভেতর প্রশিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্তে সক্ষম কিছু কুকুরকে।
বার্তা সংস্থা এএফপি সূত্রে জানা যায়, রেনেডা, ক্যাপ ও লাকি নামের তিনটি কুকুর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে করোনা শনাক্তের কাজও শুরু করেছে একটি প্রশিক্ষক দল। এটা করতে ছয়টি নৌযানের প্রতিটির ভেতরে রাখা হয় কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগী, পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ আসা ব্যক্তি ও ভুয়া নমুনা নেওয়া ব্যক্তিদের জামাকাপড়। সেই জামাকাপড়ের ঘ্রাণ শুঁকে করোনা শনাক্তে সহায়তা করে কুকুরগুলো।
কুকুরদের প্রশিক্ষণ দিতে নিজেদের মতো করে কাজ করছে প্রশিক্ষক দলটি। মানুষের ঘ্রাণের নমুনা থেকে করোনাভাইরাস শনাক্তে ৯৫ ভাগ সফল হওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে।
করোনা শনাক্তের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির প্রধান গুস্তাভ হতোভি এএফপিকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে কুকুরের সক্ষমতা যাচাই এবং মহামারি মোকাবিলায় প্রশিক্ষিত কুকুরগুলোর ব্যবহারের একটি পদ্ধতি আবিষ্কারের লক্ষ্যেই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেছেন, শুধু করোনাভাইরাস নয়। এর চেয়েও প্রাণঘাতী রোগ শনাক্তেও কাজে দেবে এই পদ্ধতি।
জার্মানি সীমান্তসংলগ্ন ক্লিনি গ্রাম থেকে হতোভি আরও বলেন, ‘এই প্রকল্পের গবেষণা শেষ হওয়ার পর আমরা প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যে বিপুলসংখ্যক মানুষকে পরীক্ষা করতে পারব। ভাইরাস মানব দেহের টিস্যু পরিবর্তন করে এবং মানুষের শরীরের ঘ্রাণের ধরনকেও প্রভাবিত করে।’
কুকুর বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত হতোভির অধীনে গত বছরের আগস্ট থেকে এ প্রশিক্ষণ শুরু হয়। হতোভি বলেছেন, মানুষের শরীরের ঘ্রাণ ব্যাপক পরিবর্তন হলে তা তাৎক্ষণিকভাবে ধরতে পারে কুকুর। সেই বিষয়টিই করোনা শনাক্তের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।