fbpx

গামছার দেয়াল, চোখ জুড়ায়, পেটও জুড়ায়!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বড় শহরে টিকে থাকা কঠিন, ছেড়ে যাওয়া অসম্ভব। কী করে ছাড়বেন প্রিয় ঢাকা? যার পরতে পরতে যেমন দুঃখ আছে, আছে চোখ জুড়ানো রঙ।

সেই রঙ রাজধানীর ব্যস্ত সড়ক শ্যামলী শিশু পল্লীর ফুটপাত জুড়ে। যেতে যেতেই হঠাৎ থমকে দাঁড়াতে হয় যে কাউকে। না কোন দামি জিনিস নয়, শিশু পল্লীর দেয়াল জুড়ে খুব দরকারি অতি প্রয়োজনীয় গামছা দেখলে অনেকেরই মনে পড়ে, একটা গামছা কেনা যে জরুরি।

লাল, সবুজ, বেগুনি, হলুদ, নানা রংয়ের খেলা সব গামছাতে। ছোট থেকে মাঝারি অথবা অথবা ৫ হাত সমান লম্বা বড় গামছা, সব সাইজের গামছাই আছে টাঙানো। পুরো দেয়ালের ছবিটাই যেনো অন্যরূপ ধারণ করেছে। গামছার রং, রুপ, আকারে মিশে আছে বিভিন্ন জেলার তাঁতীদের শ্রম আর আনন্দ।

পাবনা, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নরসিংদী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তাঁতীদের হাতেবোনা গামছার কদর আছে রাজধানী জুড়ে। এই দেয়ালজুড়ে ৭ পরিবারের আয়। স্কুল বন্ধ থাকায় অনেকের ছেলেপুলে সাহায্য করছে বাবার কাজে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জমিরুল ইসলাম মণ্ডল ২০০৪ সালে গ্রামের বেকার গরিব কয়েকজনকে নিয়ে শুরু করেন গামছা নিয়ে ব্যবসা। শিশুপল্লী কর্তৃপেক্ষের অনুমতি নিয়ে তাদের দেয়ালটি ব্যবহার করেন গামছা প্রদর্শণীর কাজে। ফুটপাত যেহেতু দখল করে দোকান দেওয়া যাবে না। তাই শিশুপল্লীর দেয়ালটিকেই ব্যবহার করে দোকান সাজিয়েছেন। যেনো আসা-যাওয়ার পথে পছন্দমতো গামছা কিনে নিতে পারেন যে কোন পথচারী।

সারিসারি সাজিয়ে রাখা গামছার দাম ৫০ থেকে ২০০ টাকা। মার্কেটের চেয়ে ফুটপাতের এই দোকানীদের কাছ থেকে গামছা কিনতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন ক্রেতারা। মার্কেটে বিক্রেতা গামছা দেখাতে দেখাতে অনেক সময় বিরক্ত হয়ে যান। এখানে কেউ বিরক্ত হয় না। কারণ সব গামছা তো চোখের সামনে টাঙিয়েই রাখা হয়।

করোনাকালে অন্য সবার মতো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ফুটপাতের গামছা ব্যবসায়ীরাও। যাদের পরিবার চলে শুধু এই উপার্জনে, লকডাউনের সময়টাতে তারা ছিলেন শঙ্কিত। আয়রোজগার কম থাকায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহারে দিন পার করার কথাও জানিয়েছেন তারা। করোনার আগে তাদের ব্যবসা ভালো ছিল, আগামী দিনগুলোতে ভালো বেচাকেনা হলে, ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশাও করছেন গামছা ব্যবসায়ীরা।

দেশি-বিদেশি তোয়ালেতে মার্কেট সয়লাব হলেও একটুও কদর কমেনি হাতে বোনা গামছার। আজকাল অনেকেই গামছা দিয়ে বানাচ্ছেন জামা ফতুয়া ও ব্লাউজ। দিনে দিনে শ্যামলীর এই জায়গাটি রাজধানীবাসীর কাছে পরিচিতি পেয়েছে গামছা দেয়াল নামে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply