দক্ষিণ গ্রিসের উপকূলে নৌকা ডুবে অন্তত ৭৯ জন অভিবাসন প্রত্যাশী মারা গেছেন। শতাধিক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হলেও আরো শতাধিক নিখোঁজ রয়েছেন। খবর বিবিসি।
গ্রিসের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অভিবাসী ট্র্যাজেডিগুলোর অন্যতম এটি। এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট কাতেরিনা সাকেলারোপুলু। দেশজুড়ে ঘোষিত হয়েছে তিন দিনের শোক।
কোস্টগার্ড জানায়, তাদের সাহায্য প্রত্যাখ্যান করার পর নৌকাটি পাইলোসের প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ডুবে যায়।
গত ১৩ জুন গভীর রাতে ইইউ সীমান্ত সংস্থা ফ্রন্টেক্সের একটি উড়োজাহাজ আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌকাটি দেখতে পায়। ওই নৌকায় কারো লাইফ জ্যাকেট ছিল না বলে জানায় কোস্টগার্ড।
গ্রিসের নৌ মন্ত্রণালয় জানায়, স্যাটেলাইট ফোনের মাধ্যমে নৌকাটির সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সাহায্যের প্রস্তাব দেয়া হলেও জবাবে বারবার বলা হয়েছিল, আমরা ইতালি যাওয়া ছাড়া আর কিছুই চাই না।
এর কয়েক ঘণ্টা পর গ্রিক কোস্টগার্ডকে জানানো হয়, নৌকার ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে গেছে। তারপর মাত্র ১০-১৫ মিনিটের ব্যবধানে ডুবে যায়। এই সময় প্রবল বাতাসের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হয়।
নৌকাটি লিবিয়া থেকে ইতালি যাচ্ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর আরোহীদের অধিকাংশই ২০ বছর বয়সী পুরুষ। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা জানান, নৌকায় ৫০০-৭০০ আরোহী ছিল।
উদ্ধার ব্যক্তিদের গ্রিসে কালামাটা শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অনেককে হাইপোথার্মিয়া বা আঘাতের জন্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এছাড়া পাচারের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
প্রতি বছর ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে শত শত অভিবাসন প্রত্যাশী নিহত হন। গত ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ ইতালিতে অভিবাসী বহনকারী নৌকা ডুবে কমপক্ষে ৯৪ জন মারা যান। রেকর্ডকৃত সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলোর অন্যতম এটি।
মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে শরণার্থী ও অভিবাসীদের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশের অন্যতম রুট গ্রিস। গত মাসে দেশটির সরকার অভিবাসীদের জোরপূর্বক বহিষ্কারের জন্য আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে পড়েন। ধারণা করা হচ্ছে, পুশব্যাকের আশঙ্কায় ডুবে যাওয়ার আগে যাত্রীরা কোস্টগার্ডের সাহায্য নিতে অস্বীকার করেছিল।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এই বছর ইউরোপের উন্নত দেশগুলোতে ৭০ হাজারেরও বেশি শরণার্থী ও অভিবাসী এসেছেন। যাদের বেশিরভাগই ইতালিতে অবতরণ করেন।