প্রথমবারের মতো ‘বাইলেটারাল টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট’ (জোড়া হাঁটু প্রতিস্থাপন) সম্পন্ন করেছে এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম। চ্যালেঞ্জিং এই সার্জারিটি সম্পন্ন করেছেন এভারকেয়ার চট্টগ্রাম-এর অর্থোপেডিক, আর্থ্রোস্কোপি ও জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট সার্জন এবং অর্থোপেডিক টিমের কনসালটেন্ট ডা. জাবেদ জাহাঙ্গীর তুহিন।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) হাসপাতাল কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসার সফলতা ও অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা।
৬৫ বছর বয়সী রোগী মিসেস সুলতানা হোসেন গত ৫ বছর যাবত হাঁটুর বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছিলেন। তার হাঁটুর জয়েন্টে ব্যাথা, হাঁটু বিকৃতি, ফোলাভাব ইত্যাদি সমস্যা ছিল। নানা পরীক্ষা শেষে তার উভয় হাঁটুতে ভারাস বিকৃতিসহ ট্রাই কম্পার্টমেন্টাল গ্রেড ফোর অস্টিওআর্থারাইটিস ধরা পড়ে। রোগী হাঁটাচলা, হাঁটু ভাঁজ করা, জয়েন্ট নড়াচড়ায় প্রায় অক্ষম ছিলেন। তার ওপর রোগীর বিগত ১২ বছর যাবত অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস মেলিটাস, উচ্চ-রক্তচাপ, স্থুলতা, বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছিল। এছাড়াও, দুই বছর আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হন, তবে সুস্থ হলেও তার ফুসফুসের অবস্থা ভাল ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহণই ছিল ভীষণ চ্যালেঞ্জিং।
অবশেষে, সার্বিক দিক বিবেচনা করে ডা. জাবেদ জাহাঙ্গীর তুহিন সিঙ্গেল অপারেটিভ সেটিংয়ে বাইলেটারাল টোটাল নি রিপ্লেসমেন্ট-এর সিদ্ধান্ত নেন। ডা. তুহিনের নেতৃত্বে অর্থোপেডিক ও অ্যানেস্থেশিয়া দলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সফলভাবে রোগীর সার্জারি সম্পন্ন হয়।
চিকিৎসা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ডা. তুহিন বলেন, ‘রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে এটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি সিদ্ধান্ত ও সার্জারি ছিল। সর্বনিম্ন সময়ের মধ্যে সার্জারি সম্পন্ন করে দীর্ঘমেয়াদী অ্যানেস্থেশিয়া ওষুধের ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণ, হাইপোথার্মিয়া প্রতিরোধ ও রক্তক্ষরণ কমানোই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য এবং মাত্র ৫ ঘন্টার মধ্যে আমরা সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হই।’
তিনি আরও বলেন, ‘এভারকেয়ার হসপিটাল চট্টগ্রাম-এ অপারেটিভ ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণে সকল ইনস্ট্রুমেন্টস অটোক্লেভ, প্লাজমা জীবাণুমুক্তকরণ সুবিধাসহ বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায়। এসব সুবিধা এবং আমাদের দক্ষ চিকিৎসক ও কর্মীদের কারণেই আমরা চট্টগ্রামে এই প্রথম এমন একটি সার্জারি সম্পন্ন করতে পেরেছি। সার্জারির দ্বিতীয় পোস্ট অপারেটিভ দিনে রোগী ওয়াকারের সাহায্যে হাঁটতে শুরু করেন। তার লিম্ব থেরাপিও চলমান রয়েছে। এই সার্জারি রোগীর পাশাপাশি হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের জন্যেও দুর্দান্ত সাফল্য বয়ে আনবে বলে আমি আশাবাদী।‘