মৌসুমের শুরুতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশ না মিললেও গত দুদিন থেকে সাগর মোহনায় প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র্রে বেড়েছে ইলিশের সরবরাহ। তবে নোয়াখালীর হাতিয়া ও ভোলা অঞ্চল থেকে ট্রলার এবং সড়কপথে ট্রাকে করে ইলিশ এলেও চাঁদপুরের নদীগুলোয় তেমন একটা পাওয়া যাচ্ছে না জাতীয় এই মাছ।
গতকাল চাঁদপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র্রের আড়তগুলোয় প্রচুর ইলিশ সরবরাহ হতে দেখা গেছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশ সরবরাহ হয়েছে প্রায় ২৫০ মণ। দামও কিছুটা কমেছে। ইলিশের আমদানি বিগত সময়ের তুলনায় পরিমাণে কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ১ কেজি ওজনের ইলিশ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০-১ হাজার ৩০০ টাকায়। এ ইলিশই খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০-১ হাজার ৫০০ টাকা কেজি দরে।
চাঁদপুর মাছঘাটে দেখা গেছে, ইলিশ বেচাকেনায় সরগরম হয়ে উঠেছে আড়তগুলো। পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা ক্রেতা ও শ্রমিকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাছঘাটসংলগ্ন ডাকাতিয়া নদী দিয়ে আসা ট্রলারগুলো থেকে শ্রমিকরা ইলিশ আড়তে এনে স্তূপ করে রাখছেন। এরপর হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। আবার কিছু ইলিশ রফতানির জন্য বাক্সভর্তি করছেন শ্রমিকরা। আবার খুচরা কেনার জন্য স্থানীয় ক্রেতারাও ভিড় জমিয়েছেন।
বড় স্টেশন মৎস্য আড়তের ম্যানেজার মো. ফারুক মিজি জানান, ২৫০ গ্রামের অর্থাৎ ৪টায় কেজি ইলিশ প্রতিমণ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের প্রতি মণ ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩০ হাজার টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৪৮-৫০ হাজার টাকা। আর দেড় থেকে দুই কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বড় আকারের ইলিশের সংখ্যা কম দেখা যাচ্ছে আড়তগুলোয়।
তিনি আরো জানান, গত এক সপ্তাহে ইলিশের আমদানি কম ছিল। তবে সাগরে নিম্নচাপ থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের জেলেরা মাছ আহরণ থেকে বিরত ছিলেন। ফলে শনিবার আহরণ করা সব ইলিশ মাছঘাটে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা।
চাঁদপুর মৎস্য ও বণিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবেবরাত সরকার জানান, নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি হওয়ায় জেলেরা আগের চেয়ে ইলিশ কিছুটা বেশি পাচ্ছেন। শনিবার আমদানি হয়েছে প্রায় ২৫০ মণ। নদীতে পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ইলিশের আমদানি আরো বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. তানজিমুল ইসলাম জানান, ১০ দিন আগেও ইলিশের সরবরাহ খুবই কম ছিল। দামও ছিল চড়া। তবে গত দুদিন ইলিশের আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দামও কিছুটা কমেছে। তারা মাছঘাটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে বৃষ্টি ও নদীতে স্রোত বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়ছে আগের চাইতে অনেক বেশি।