চীনের গত এক দশকের আদমশুমারির ফলাফলে দেখা গেছে, কয়েক দশকের মধ্যে দেশটিতে জনসংখ্যা বেড়েছে সবচেয়ে ধীর গতিতে। এই পরিস্থিতিতে চীন তাদের আগের নীতি থেকে সরে এসে প্রত্যেক দম্পতিকে তিনটি সন্তান নেওয়ার অনুমোদন দেবে বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর এর মাধ্যমে দেশটিতে তাদের কঠোর ‘দুই সন্তান নীতি’র অবসান ঘটলো বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসি চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সিনহুয়ার প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বলেছে, আজ সোমবার (৩১ মে) চীনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং -এর নেতৃত্বে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, দেশটির জনসংখ্যা জরিপ থেকে জানা গেছে, ১৯৬০ দশকের পর দেশটিতে সন্তান জন্মের হার সবচেয়ে কম দেখা গেছে। সে সময় দেশটিতে শিশুর জন্ম হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ। আর গতবছর এর সংখ্যা কমে শিশু জন্ম নিয়েছে ১ কোটি ২০ লাখ।
চীনের ন্যাশনাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে বর্তমানে প্রজননের হার ১ দশমিক ৩। আর সেখানের জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখার জন্য যে জন্মহার থাকা প্রয়োজন, তার চেয়ে কম এই হার। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে দেশটিতে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে পারে, এমন আশঙ্কায় দম্পতিদের আরও বেশি সন্তান নেওয়ার অনুমতি দিলো চীন।
বিবিসি জানায়, এর আগে ১৯৭৯ সালে জনসংখ্যা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরার লক্ষ্যে চীনে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করা হয়েছিল। তারপর থেকে এই নীতি লঙ্ঘন করা পরিবারগুলোকে জরিমানা, চাকরি হারানো এবং কখনো কখনো জোরপূর্বক গর্ভপাতের শিকারও হতে হয়েছিল। পরবর্তীতে, ২০১৬ সালে এই নীতি থেকে বেরিয়ে আসে চীন। অর্থনৈতিক স্থবিরতা আর জনশক্তির কথা বিবেচনা করে দম্পত্তিদের তখন দু’টি সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয় চীন সরকার। আর এখন সন্তান জন্মের হার কম ও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কারণে আবারও তাদের নীতি পরিবর্তন করলো দেশটি।