fbpx

জমকালো আয়োজনে চুয়েটে ‘২০তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উদযাপিত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

নতুন নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও জনকল্যাণমূলক গবেষণাই হচ্ছে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান কাজ। গবেষণা ক্ষেত্রে চুয়েট নিজস্ব অবস্থান থেকে অবদান রেখে যাচ্ছে। সরকারের রূপকল্প-২০৪১ অনুসরণে “স্মার্ট বাংলাদেশ” বিনির্মাণে চুয়েট প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।

১ সেপ্টেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে চুয়েটের ২০তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি চুয়েট ক্যাম্পাসে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে দেশের প্রথম শেখ কামাল আইটি বিজনেস ইনকিউবেটরের শুভ উদ্বোধন করেছেন। আমরা আশা করবো এই ইনকিউবেটরের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে তরুণ প্রজন্ম ৪র্থ শিল্প বিপ্লবে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। এই বিশ^বিদ্যালয়ের অগ্রযাত্রায় প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে যারা বিভিন্নভাবে ভূমিকা রেখেছেন এবং বর্তমানেও যারা নিরলসভাবে চুয়েটের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহতভাবে এগিয়ে নিতে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, আমি তাদের সকলের অবদানকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছি।”

একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন বলেন, “আমরা প্রকৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছি। পারিবারিক বন্ধনও আলগা হয়ে আসছে। প্রযুক্তি আমাদের বশীভূত করে রেখেছে। আমাদের সামাজিকতা বিঘ্নিত হচ্ছে। সামাজিক মিথস্ক্রিয়া হ্রাস পাচ্ছে। আমাদের সামাজিক মননে ও মনোজগতে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আমরা শুধু ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করেছি সেটাই নয়, একইসাথে আমাদের বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়েছে, প্রকট জলবায়ু পরিবর্তন হয়েছে, খরা, অতিমারি ও বন্যা বেড়েছে। কৃষি ও খাদ্য উৎপাদনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। মানবজাতি ও সভ্যতা এখন বড় ধরনের সঙ্কটের মুখে পড়েছে। বর্তমান বাস্তবতায় আমাদের এটা নিয়ে ভাবতে হবে। ভবিষ্যত প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা কেবলই জ্ঞান ও উদ্ভাবনের ভোক্তা হয়ে থাকলে হবে না। আমাদেরকেও নির্মাতার ভূমিকায় আসতে হবে। সেজন্য প্রকৌশলী সমাজ ও বিজ্ঞানীদের মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি চুয়েটে সে ধরনের দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির সুযোগ রয়েছে।”

অনুষ্ঠানের শুরুতে চুয়েটের উপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করেন উপ-পরিচালক (তথ্য ও প্রকাশনা)  মোহাম্মদ ফজলির রহমান। পরে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রধান বক্তা কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেনকে চুয়েট পক্ষ থেকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম। আলোচনা সভা শেষে চুয়েট মেডিকেল সেন্টারে রক্তদান কর্মসূচি, পরে শিক্ষক বনাম ছাত্র ও কর্মকর্তা বনাম কর্মচারী প্রীতি ফুটবল ম্যাচ এবং পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।

এর আগে সকাল ১০.৪০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-২ এর সামনে জাতীয় পতাকা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করা হয়। পরে বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর। এর পরপরই ২০তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক আনন্দ র‍্যালি বের করা হয়। র‍্যালিতে রঙ-বেরঙের প্ল্যাকার্ড ও ফ্যাস্টুন সহকারে চুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীগণ অংশগ্রহণ করেন। পরে ইএমই ভবনের উত্তর পাশে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষা-গবেষণার একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) আত্মপ্রকাশ করে। প্রতিষ্ঠানটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অধীনে ১৯৬৮ সালের ২৮ ডিসেম্বর ‘চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ’ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালের ১ জুলাই স্বায়ত্তশাসিত ‘বিআইটি, চট্টগ্রাম’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। চুয়েটে বর্তমানে ১২টি বিভাগে ৯২০টি আসনের (উপজাতি কোটাসহ মোট ৯৩১ আসন) বিপরীতে প্রায় ৬ হাজার ২০০ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে। এছাড়া ১০০জন পিএইচডি ডিগ্রীধারীসহ প্রায় ৩৪০ জন শিক্ষক, ১৬০ জন কর্মকর্তা এবং ৪৩৫ জন কর্মচারী নিয়ে একটি পরিবার হিসেবে চুয়েটকে এগিয়ে নেওয়ার ব্রত নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply