fbpx

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বীর মুক্তিযোদ্ধা, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। মঙ্গলবার রাত ১১ টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তার মৃত্যুর খবরটি বিবিএস বাংলাকে নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রধান কিডনি রোগ বিশেষজ্ঞ ও মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. মামুন মোস্তাফি।

জানা গেছে, জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কিডনি রোগ জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ৫ এপ্রিল থেকে তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিডনি ফেইলিউর, লিভারের সমস্যা, হার্টের সমস্যাসহ সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন তিনি। শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন ও ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার কারণে তাকে বিশেষ ওষুধও দেওয়া হচ্ছিল। শারীরিক অবস্থার কোনো পরিবর্তন না হওয়ায় তার চিকিৎসার জন্য বিশেষ মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছিল।

১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তার বাবার শিক্ষক ছিলেন বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন। ১০ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বকশীবাজার স্কুল, ঢাকা কলেজ ও ঢাকা মেডিকেল থেকে পড়াশোনা করেছেন তিনি। ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা মেডিকেল কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছাত্র অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তিনি। ১৯৬৪ সালে ডিএমসি থেকে এমবিবিএস ও ১৯৬৭ সালে বিলেতের রয়্যাল কলেজ অব সার্জনস থেকে জেনারেল ও ভাস্কুলার সার্জারিতে এফআরসিএস প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। কিন্তু চূড়ান্ত পর্ব শেষ না করে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে ফিরে আসেন দেশে। তিনি যুক্তরাজ্যের প্রথম বাংলাদেশী সংগঠন ‘বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশন(বিডিএমএ’র)’ প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক।

তিনি একজন বাংলাদেশি চিকিৎসক, জনস্বাস্থ্য সক্রিয়তাবাদী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং মুক্তিযোদ্ধা। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র নামক স্বাস্থ্য বিষয়ক এনজিওর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৮২ সালে বাংলাদেশের ‘জাতীয় ঔষধ নীতি’ ঘোষণার ক্ষেত্রে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম যোদ্ধা। রণাঙ্গনে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে প্রাণ বাঁচিয়েছেন অসংখ্য আহত ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধার। জাতির যেসব সূর্যসন্তান আজকের এই স্বাধীন, সার্বভৌম বাংলাদেশ গড়ার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং রাজনীতির বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তাদেরমধ্যে তিনি অন্যতম।

তিনি ব্যাক্তিগত জীবনে তার কাজের জন্য অসংখ্য পুরস্কার অর্জন করেছেন। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি ১৯৭৭ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও তিনি ফিলিপাইন থেকে রামন ম্যাগসাইসাই এবং সুইডেন থেকে বিকল্প নোবেল হিসেবে পরিচিত রাইট লাভলিহুড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্টারন্যাশনাল হেলথ হিরো’ এবং মানবতার সেবার জন্য কানাডা থেকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি পেয়েছেন। ২০২১ সালে আহমদ শরীফ স্মারক পুরস্কার পান তিনি।

একজন সচেতন সমাজ সংস্কারক হিসেবে তিনি আজীবন কাজ করে গেছেন বিভিন্ন সেক্টরে। তার সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা ছিল।

Advertisement
Share.

Leave A Reply