fbpx

ডিভাইস জানাবে দাবানলের পূর্বাভাস

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

প্রতিবছর দাবানলের কারণে ধ্বংস হয়ে যায় লাখ লাখ হেক্টর বনভূমি। সেই সঙ্গে প্রায় ৮০০ কোটি টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হয়, যা বৈশ্বিক কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমনের প্রায় ২০ শতাংশের সমান। আধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে কিছু মানুষ এমন বিপর্যয় এড়ানোর ব্রত নিয়েছেন।

প্রায় প্রতিবছরই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে দাবানলের ঘটনা ঘটে। এতে কখনো কখনো ব্যাপক প্রাণহানিও হয়। চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে চরম তাপপ্রবাহ জীবন দুর্বিষহ করে তুলেছে। দাবানলের প্রকোপে অনেক বনাঞ্চল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রাণ হারিয়েছে কয়েক শ মানুষ।

বিশাল মাত্রার পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতিও হয়। বিষয়টি নিয়ে অনেক ভেবেছেন ড্রিয়াড নেটওয়ার্কসের কর্ণধার কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে। সেই ভাবনা থেকেই বিজ্ঞানী, সফটওয়্যার ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের এক টিম গড়ে তোলেন তিনি।

কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে বলেন, ‘২০১৮ সালে আমি প্রথমবার টেলিভিশনের পর্দায় আমাজন অঞ্চল এবং অস্ট্রেলিয়ায় বিশাল দাবানল দেখি। সেসময় পরিবেশ রক্ষার তাগিদে ফ্রাইডেস ফর ফিউচার নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠন আন্দোলনে নামে। আমার নিজের মেয়েও তাতে শামিল হয়েছিল। সে সময় মনে হয়েছিল, আমাকে কিছু একটা করতেই হবে।’

বিজ্ঞানী, সফটওয়্যার ও কম্পিউটার বিশেষজ্ঞদের একটি দল গড়ে তোলেন তিনি। তাঁরা সবাই মিলে যতটা আগে সম্ভব দাবানল শনাক্ত করার লক্ষ্যে নতুন এক সিস্টেম সৃষ্টি করেন। গন্ধ টের পায় এমন বিশেষ সেন্সর ‘আলট্রা আর্লি ডিটেকশন’ এই বিষয়টিকে সম্ভব করে তোলে। এক অর্থে সেগুলোকে অত্যন্ত উন্নত যান্ত্রিক নাকও বলা যায়।

ড. ইয়ুর্গেন ম্যুলার তাঁর সেন্সর কীভাবে কাজ করে সে বিষয়ে বলেন, ‘বাতাসে নানা ধরনের উপাদান রয়েছে। কার্বন ডাইঅক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, সালফেট এবং নোবেল গ্যাস। সেন্সর সেসব পরিমাপ করে। যে মুহূর্তে সেই ইন্টেলিজেন্ট নোজ বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নেয় তখন বাতাসে থাকা অন্যান্য গ্যাসের মিশ্রণও স্বাভাবিকভাবে শনাক্ত করতে পারে সেটি। ফলে পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ে সেটি কোনো নির্দিষ্ট স্থানের বাতাসে উপস্থিতি কণার পরিমাণ এবং অবস্থান জানিয়ে দেয়।’

এই প্রণালি আদর্শভাবে কাজে লাগাতে হলে জঙ্গলজুড়ে এক শ মিটার দূরত্বে একটি করে সেন্সর বসাতে হবে বলেও জানান ড. মুলার। ইন্টেলিজেন্ট নোজের সংগ্রহ করা তথ্য নিজস্ব উদ্যোগে তৈরি এক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ক্লাউড সার্ভারে তথ্য পাঠানো হয়। পরে সেখানে তথ্য প্রক্রিয়া করা হয়।

প্রযুক্তিটি সাধারণের কাছে ‘ইন্টারনেট অফ থিংস’ নামে পরিচিত হলেও কার্স্টেন ব্রিংকশুল্টে সেটির নাম রেখেছেন ‘ইন্টারনেট অফ ট্রিস’। বিশ্বের বড় বনগুলোতে সাধারণত টেলিকম কোম্পানিগুলোর কোনো টাওয়ার থাকে না। অর্থাৎ ইন্টারনেটের ওপর নির্ভরশীল কোনো প্রযুক্তি সেখানে প্রয়োগের অর্থ নেই। তাই আমাদের নিজেদের যোগাযোগের অবকাঠামোর প্রয়োজন।

সেটিকে আবার সৌরশক্তিচালিত হতে হবে। তা ছাড়া বড় এলাকাজুড়ে সেটা কার্যকর হতে হবে। এই মেশ-গেটওয়ের মাধ্যমে আমরা ঠিক সেটিই সম্ভব করেছি। এর মাধ্যমে আমরা বনের মধ্যে দুই কিলোমিটার রেঞ্জে যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি। এবার ধাপে ধাপে বনের আরও গভীরে প্রবেশ করব।

বনের এই বুদ্ধিমান নাকগুলো আসলেই কবে থেকে তার কাজ শুরু করতে পারবে বা সে জন্য কতদিন অপেক্ষা করতে হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply