আজ ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তির ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক)। এক সপ্তাহ আগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ নিয়ে তিনি ঢামেকে ভর্তি হন। এই রোগী এক মাস আগে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। করোনা থেকে সেরে ওঠার পরই তার শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের উপসর্গ ধরা পড়ে।
আজ সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে ঢামেক হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. ফরহাদ উদ্দিন চৌধুরী মারুফ সংবাদমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ডা. ফরহাদ উদ্দিন জানান, খুলনার এই রোগী করোনা থেকে সেরে ওঠার পরে তার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। যেমন, মাথাব্যথা, ডান চোখে সমস্যা, সাইনোসাইটিস, মুখের এক পাশে ফুলে যাওয়া এবং নাক দিয়ে ঠিকমতো বাতাস নিতে পারছিলেন না এই ব্যক্তি। এ সময় চিকিসৎকেরা তাকে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকটেড সন্দেহ করে গত পরশু শনিবার নাক, কান ও গলা বিভাগের সহায়তায় তার নাক অপারেশন করেন। অপারেশনের আগে এই রোগীর শ্বাসকষ্ট থাকলেও এখন তা স্বাভাবিক রয়েছে বলেও জানান ডা. ফরহাদ।
তিনি আরও জানান, অপারেশনের পর স্যাম্পল নিয়ে বারডেম হাসপাতালে এই ব্যক্তির ফাঙ্গাস টেস্ট করতে দেওয়া হয়। সেখানে তার হিস্ট্রোপ্যাথলজি, মাইক্রোস্কপি ও কালচার তিনটিতেই ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হয়। এই রোগীকে চার থেকে ছয় সপ্তাহ চিকিৎসা নিতে হবে বলেও জানান ডা. ফরহাদ।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক বলেন, যেহেতু ব্ল্যাক ফাঙ্গাস রোগী এটিই প্রথম নয়, তাই এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
উল্লেখ, ভারতে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই গত মাসে আলোচনায় আসে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। সেখানে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া রোগীদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস অর্থাৎ কালো ছত্রাকের সংক্রমণ দেখা দেয়। দেশটির অনেক রোগী মিউকরমাইকোসিস নামক এই রোগে আক্রান্ত হয়ে চোখ হারানোর মতো ঘটনাও ঘটেছে।
ভারতের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা করোনার চিকিৎসায় বেশি মাত্রায় স্টেরয়েডের ব্যবহারকে এই রোগ সংক্রমণের জন্য দায়ী করছেন। তাছাড়া, অন্যান্য দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ব্যক্তিদের যদি করোনা সংক্রমণ হয়, তাহলেও তাদের দেহের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা আরও দুর্বল হয়ে এই ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় বলেও জানায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।