করোনাকালে দেশের দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর দক্ষতা উন্নয়ন ও জীবিকা নির্বাহে সাহায্য করতে ৬০ কোটি ডলার বা পাঁচ হাজার কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। ৫ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর এ ঋণ দিয়ে দুটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে বলে বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তরুণ, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কর্মসংস্থান এবং জীবিকার সুযোগ উন্নত করতে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। এ অর্থ দিয়ে প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সহায়তা করা হবে। এ অর্থ কোভিড-১৯ মহামারির বর্তমানসহ ভবিষ্যৎ ধাক্কা সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এই আর্থিক সহায়তা প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দনদন চেন বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ওপর করোনা ভয়াবহ প্রভাব ফেলেছে। বিশেষ করে নারী ও তরুণ শ্রমিক, প্রবাস থেকে ফেরত আসা জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এ দুটি প্রকল্প গ্রামীণ দরিদ্র জনগণকে ক্ষমতায়ন ও সংহত করতে ভবিষ্যতের চাকরির জন্য তাঁদের প্রস্তুত করবে।
বিশ্বব্যাংক থেকে জানানো হয়েছে, অ্যাকসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (এএসএসইটি) প্রকল্পে ৩০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করেছে সংস্থাটি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি তরুণ এবং শ্রমিককে ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। বিশেষ করে এ প্রকল্পে তরুণ, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত ব্যক্তিদের সহায়তা করা হবে। প্রকল্পটি মহামারির সময় এবং তার পরে শ্রমিকদের আবার প্রশিক্ষিত করে অর্থনৈতিক গতি পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে শিল্পগুলোকে সহায়তা করবে।
রেসিলিয়েন্স, এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড লাইভলিভ ইমপ্রুভমেন্ট (আরইএলআই) প্রকল্পে ৩০ কোটি ডলার অর্থ দেওয়া হবে।
এক গবেষণায় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, করোনাকালে বাংলাদেশে দেশে কাজ হারিয়ে গরীব মানুষের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর দরিদ্রের খাতায় নাম লিখিয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ। দেশের ২০ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গছে।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে, করোনায় প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছে। এ সংখ্যা ১ কোটি ১১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি ৫ লাখ হতে পারে। কর্মহীন হওয়াদের মধ্যে প্রচুর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক রয়েছে।
এছাড়া করোনাকালে সারা দেশে শ্রমজীবী মানুষের বেতন কমেছে ৩৭ শতাংশ, ঢাকায় ৪২ ও চট্টগ্রামে ৩৩ শতাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। শহর এলাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে এমন ১০০ জনের মধ্যে ৬৯ জন এখনো চাকরি হারানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে।