fbpx

দেশে মাথাপিছু ঘুষ দেওয়ার পরিমাণ ৬৭১ টাকা: টিআইবি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশে মাথাপিছু ঘুষ দেওয়ার পরিমাণ ৬৭১ টাকা, সেবা খাতে দুর্নীতির শিকার হচ্ছে প্রায় ৭১ শতাংশ পরিবার। বিভিন্ন সেবা পেতে প্রতিটি পরিবারকে গড়ে ৬ হাজার ৬৩৬ টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

টিআইবির ‘সেবা খাতে দুর্নীতি: জাতীয় খানা জরিপ ২০২১’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বুধবার (৩১ আগস্ট) ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ১২ মাসে দেশে ঘুষ দেওয়া টাকার পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৮৩০ কোটি। মোট ১৭টি সেবা খাতে এই ঘুষের টাকা দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এ সময় দেশে সর্বাধিক দুর্নীতিগ্রস্ত খাত ছিল পাসপোর্ট অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা।

প্রতিবেদনে ১৭ ধরনের সেবা খাতের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয়। সেবাগ্রহীতাদের অভিজ্ঞতামূলক জরিপে ১৫ হাজার ৪৫৪টি খানা অংশগ্রহণ করে। এই দুর্নীতির সময়কাল ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে ২০২১ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত। দুর্নীতির মধ্যে রয়েছে ঘুষ, জোরপূর্বক অর্থ আদায়, প্রতারণা, দায়িত্বে অবহেলা, স্বজনপ্রীতি, সময়ক্ষেপণসহ বিভিন্ন হয়রানি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ৭৪ দশমিক ৪ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে আছে পাসপোর্ট খাত, এখানে সাড়ে ৭০ শতাংশ খানা দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এরপর রয়েছে বিআরটিএ, বিচারিক সেবা, স্বাস্থ্য, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান এবং ভূমিসেবা।

জরিপে অংশ নেওয়া ৭২ দশমিক ১ শতাংশ মনে করেন, ঘুষ না দিলে সেবা পাওয়া যায় না। তারা ঘুষ দেন হয়রানি বা ঝামেলা এড়াতে। খানাপ্রধানের প্রতিবন্ধিতা থাকলে দুর্নীতি ও ঘুষের শিকার হওয়ার প্রবণতা বেশি। ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরা কম দুর্নীতির শিকার হয়েছেন। বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছেন ৫৬ থেকে ৬৫ বছর বয়সীরা।

টিআইবির প্রতিবেদন বলছে, দুর্নীতির শিকার হলেও অভিযোগ করেননি ৭৯ দশমিক ২২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। এর মধ্যে ঝামেলা বা হয়রানির ভয়ে ৫৫ শতাংশ অভিযোগ করেননি। সব খানেই দুর্নীতি-তাই অভিযোগ করার প্রয়োজনবোধ করেননি ৪৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। সাড়ে ১৯ শতাংশ অংশগ্রহণকারী দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন। তবে ৭২ শতাংশ অভিযোগের ক্ষেত্রেই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযোগের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই সময়ে দেশে গ্রামাঞ্চলে সেবা খাতে ঘুষের শিকার বেশি হয়েছে। নিম্ন আয়ের লোকজনের ওপর দুর্নীতির বোঝা অপেক্ষাকৃত বেশি। পাসপোর্ট, বিআরটিএ, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মতো কিছু সেবা খাতে ডিজিটালাইজেশন পুরোপুরি না হওয়ায় দুর্নীতির পরিমাণ বেড়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সার্বিকভাবে সেবা খাতে দুর্নীতি বেড়েছে। সেবা খাতের দুর্নীতির এই চিত্র উদ্বেগজনক। শুধু সেবা খাতের “পেটি করাপশনের (ছোট দুর্নীতি)” মাত্রাই এত ব্যাপক। বড় প্রকল্প, বড় কেনাকাটায় দুর্নীতির মাত্রা আরও বেশি বলেই ধারণা করা যায়। দুর্নীতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা সরকারের কাছে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে সেগুলোর প্রয়োগ দেখা যায় না। এই প্রতিবেদন সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচকভাবে নিয়ে দুর্নীতি কমাতে উদ্যোগ নেবে বলে আমরা আশা করি।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply