জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বজুড়ে নানান ধরণের সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এসব সংকটের মধ্যে অন্যতম সুপেয় ও ব্যবহারযোগ্য পানির সংকট। এই সংকট নিয়ে নতুন তথ্য সামনে আনল ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই)।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে নতুন প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের জনসংখ্যার এক–চতুথাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ চরম পানিসংকটের মধ্যে রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের গতি ত্বরান্বিত হওয়ায় এই সংকট দিনে দিনে বেড়েই চলেছে তা স্পষ্ট করে এই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬০ সালে পানির যে পরিমাণ চাহিদা ছিল, বর্তমানে তা দ্বিগুণ হয়েছে।
খাদ্য, বন, পানি, জ্বালানি, শহর ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউআরআই। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাসের ওই প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়েছে, এখন যে সংখ্যক মানুষ পানির সংকটে রয়েছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ এর সঙ্গে আরও ১০০ কোটি মানুষ যুক্ত হবেন।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের দেওয়া তথ্য অনুসারে বিশ্বে এখন ৮০০ কোটি মানুষের বসবাস। অ্যাকুডাক্ট ওয়াটার রিস্ক অ্যাটলাস প্রতিবেদন আমলে নিলে, বর্তমানে ২০০ কোটি মানুষ পানি সংকটে রয়েছেন। আর ২০৫০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে হবে ৩০০ কোটি।
বর্তমানের পানিসংকট নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, পানির চরম সংকটে থাকা মানুষ বলতে এমন মানুষদের বোঝানো হয়েছে, যাদের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ পানি আসে পরিশোধিত উৎস থেকে। অর্থাৎ ব্যবহৃত পানি আবারও ব্যবহার উপযোগী করে তাঁরা কাজে লাগিয়ে থাকেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যে ২৫ শতাংশ মানুষ পানির চরম সংকটে রয়েছেন, তাঁদের বসবাস মাত্র ২৫টি দেশে। পৃথিবীর দুটি অঞ্চলের মানুষ বেশি পানির সংকটে রয়েছেন। এই দুটি অঞ্চল হলো মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় থাকা পাঁচটি দেশ হলো বাহরাইন, সাইপ্রাস, কুয়েত, লেবানন ও ওমান। বলা হচ্ছে, স্বল্প সময়ের জন্য খরা দেখা দিলেও এই দেশগুলোতে ব্যবহার্য পানি প্রায় শূন্যের কোটায় নেমে আসে।
এই পাঁচটি দেশের বাইরে যে পাঁচটি ঝুঁকিতে রয়েছে সেগুলো হলো সৌদি আরব, চিলি, স্যান ম্যারিনো, বেলজিয়াম ও গ্রিস।
বিভিন্ন কারণে ব্যবহারযোগ্য পানির চাহিদা বাড়ছে। এর মধ্যে রয়েছে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, কৃষি উৎপাদন বাড়ানো। তবে পানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি কোনো নীতিমালা না নেওয়া এবং এই খাতে কম বিনিয়োগও পানিসংকেটর কারণ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।