fbpx

প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর পদত্যাগ, টিকে থাকার লড়াইয়ে বরিস জনসন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

অনেকটা আকস্মিকভাবেই মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ দুই সদস্যের পদত্যাগ। শুধু পদত্যাগ করেই তাঁরা ক্ষান্ত দেননি, তাঁরা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিজের রাজনৈতিক ‘ক্যারিয়ার’ টিকিয়ে রাখতে এখন লড়ছেন বরিস। বুধবার (৬ জুলাই) বিবিসি অনলাইনের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়।

বরিসের মন্ত্রিসভা থেকে সর্বশেষ পদত্যাগ করা দুই সদস্য হলেন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার তাঁরা পদত্যাগ করেন। প্রভাবশালী দুই মন্ত্রীর পদত্যাগে ভীষণ চাপে পড়েছেন বরিস।

সুনাক–সাজিদের পথ অনুসরণ করেছেন আরও কতিপয় উচ্চপদস্থ ব্যক্তি।

এমন পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী বরিসের ‘শেষ’ দেখছেন সমালোচকেরা।

বিরোধী লেবার পার্টি বলেছে, বরিস জনসন একটি দুর্নীতিগ্রস্ত দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

তবে কঠোর সমালোচনা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী বরিস স্পষ্ট করেছেন যে তিনি ক্ষমতা ছাড়ছেন না।

মন্ত্রিসভা পুনর্গঠনের মাধ্যমে সরকার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

ইতিমধ্যে নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে নাদিম জাহাবির নাম ঘোষণা করেছেন বরিস। নাদিম শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর শূন্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মিশেল ডোনেলানকে। তিনি বরিসের অনুগত হিসেবে পরিচিত।

আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে সাজিদের স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে স্টিভ বার্কলেকে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর চিফ অব স্টাফের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বরিস এখন সবচেয়ে মারাত্মক নেতৃত্ব-সংকটে রয়েছেন।

আজ দিনের শেষ ভাগে পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব রয়েছে। এ পর্বে বরিস আরও চাপের মুখে পড়বেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পার্লামেন্ট সদস্যদের একটি দলের সমন্বয়ে গঠিত লিয়াজোঁ কমিটিকে তথ্য–প্রমাণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। এই কমিটি সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্ত পরীক্ষা–নিরীক্ষার দায়িত্বে রয়েছে।

পদত্যাগের পর সুনাক বা সাজিদ কেউই প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। তবে গতকাল তাঁরা যে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, তাতে প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেছেন।

বিদায়ী অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক লিখেছেন, জনগণ আশা করে, সঠিকভাবে, দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে সরকার পরিচালিত হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এসব মানদণ্ডের জন্য লড়াই করা জরুরি। এ জন্যই তিনি পদত্যাগ করেছেন।

অন্যদিকে সাজিদ খান লেখেন, প্রধানমন্ত্রী বরিসের ওপর তাঁর আর আস্থা নেই। তিনি আর বিশ্বাস করেন না যে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার সক্ষমতা বরিসের রয়েছে।

সুনাক–সাজিদের পথ অনুসরণ করে পদত্যাগ করতে বরিসের মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিরোধী দলের নেতারা।

লেবার নেতা স্যার কেইর স্টারমার বলেছেন, তিনি আগাম সাধারণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।

কনজারভেটিভ এমপি ও সাবেক চিফ হুইপ অ্যান্ড্রু মিচেল প্রধানমন্ত্রী বরিসের ‘শেষ’ দেখতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন।

মিচেল বলেছেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার মতো চরিত্র বা মেজাজ–মর্জি, কোনোটাই তাঁর (বরিস) নেই। এখন শুধু একটিই প্রশ্ন, ঘটনা কত দূর গড়াবে।’

তবে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির কোন এমপি প্রধানমন্ত্রী বরিসের নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ জানাননি। কতিপয় মন্ত্রী বরিসের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস।

ভবিষ্যৎ টোরি নেতা হওয়ার দৌড়ে আছেন লিজ। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী বরিসের প্রতি তাঁর শতভাগ সমর্থন রয়েছে।

ডোমিনিক রাব, মাইকেল গভ, থেরেসি কফি ও বেন ওয়ালেসও সরকারে থেকে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন।

টোরির ড্যানিয়েল কাওজিনস্কির মতে, মন্ত্রীদের পদত্যাগ বরিসের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে।

ড্যানিয়েল বলেন, তাঁরা প্রধানমন্ত্রী বরিসের বিরুদ্ধে ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করতে পারতেন। কিন্তু তা হয়নি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বরিস বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকার দেন। এর কয়েক মিনিট পরই রাজনৈতিক নাটকীয়তা শুরু হয়।

সাক্ষাৎকারে বরিস স্বীকার করেন, ক্রিস পিনচারের অসদাচরণের অভিযোগের বিষয়টি তাঁর জানা ছিল। তারপরও চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তাঁকে ডেপুটি চিফ হুইপ করেন তিনি। এটি ছিল তাঁর একটা বাজে ভুল।

বরিসের এই স্বীকারোক্তি নতুন ইস্যু হিসেবে তাঁকে চাপে ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী বরিসের নেতৃত্ব ও তাঁর সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে এখন কনজারভেটিভ এমপিরা প্রশ্ন জোরদার করতে পারেন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোয় একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন বরিস ও তাঁর সরকার। এর মধ্যে রয়েছে লকডাউন চলাকালে ডাউনিং স্ট্রিটে পার্টি আয়োজন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply