বলা যায় এআই জ্বরে ভুগছে বিশ্ব। টেক দুনিয়ার খোঁজ খবর যারা রাখেন তারা এরই মধ্যে এআই দিয়ে নানান রকম নীরিক্ষা শুরু করে দিয়েছেন। হলিউড ইন্ডাস্ট্রি এবার এক চমকপ্রদ খবর দিলো। হলিউড উদ্যোগ নিয়েছে কিংবদন্তি মৃত তারাকাদের ফিরিয়ে আনার।
আবারও বিগ স্ক্রিনে নতুন গল্পে নতুন চরিত্রে দেখা মিলবে এসব হলি তারকাদের।
সম্প্রতি স্টার ওয়ার্স ফিল্ম, দ্য রাইজ অব স্কাইওয়াকার চলচ্চিত্রে প্রিন্সেস লিয়ার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য প্রয়াত ক্যারি ফিশারকেও সিজিআই ব্যবহারের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। এরপর ব্রাজিলিয়ান মৃত গায়ক এলিস রেজিনাকে সম্প্রতি একটি গাড়ির বিজ্ঞাপনের জন্য তার মেয়ে মারিয়া রিতার সাথে দেখানো হয়েছে।
হলিউড অভিনেতা জেমস ডিন, যিনি ১৯৫৫ সালে মাত্র তিনটি ছবিতে অভিনয় করার পরে একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান। তার সবগুলো চলচ্চিত্রই অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছিল। এখন তার মৃত্যুর প্রায় সাত দশক পর ডিনকে ‘ব্যাক টু ইডেন’ নামে একটি নতুন চলচ্চিত্রে তারকা হিসেবে কাস্ট করা হয়েছে।
শুধু জেমস ডিন নন, এই তালিকায় আরও কয়েকজন মৃত অভিনেতার নাম আছে। যারা উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির সাহায্যে হলিউডের পর্দায় তাদের জাদু ছিটাতে পর্দার জীবনে আবার ফিরে এসেছেন। তালিকায় আছেন ক্যারি ফিশার, হ্যারল্ড র্যামিস এবং পল ওয়াকার প্রমুখের মতো উল্লেখযোগ্য সেলিব্রিটি যারা মরণোত্তর আইকনিক ফিল্মে আবার অভিনয় করছেন।
এই মৃত অভিনেতাদের ডিজিটাল ক্লোন – ডিপফেইক তৈরি করতে ব্যবহৃত হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি। এই ডিজিটাল ডিপফেইক ক্লোন অভিনেতাই মূলত চলচ্চিত্রের অন্যান্য অভিনেতাদের সাথে পর্দায় হাঁটবে, কথা বলবে এবং ইন্টারঅ্যাক্ট করবে৷
চলচ্চিত্রে ডিপফেইক প্রযুক্তির ব্যাবহার নিয়ে অভিনেতা টম হ্যাঙ্কস সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন যে, তিনি তার মানবজীবনের বাইরেও ভালভাবে কাজ করতে পারবেন। আগামীকাল যদি তাকে একটি বাস আঘাত করে মেরে ফেলে তাহলে এটি তার অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে নিতে পারবে।
তবে চলচ্চিত্র শিল্পের এই প্রযুক্তিগত বিপ্লব অনেক অভিনেতা এবং চিত্রনাট্য লেখকদের উদ্বেগের বিষয় হিসেবেও সামনে এসেছে। অনেকেই এই এআই অ্যালগরিদম দ্বারা অভিনেতাদের প্রতিস্থাপিত হওয়ার বিষয়কে ভালোভাবে নিচ্ছেন না। লাভের আশায় চলচ্চিত্র শিল্পের সৃজনশীলতার সাথে আপোষ করতে হবে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
এছাড়া এখন প্রযুক্তিটি প্যাসিভ ডিজিটাল ডিপফেক প্রযুক্তির বাইরেও চলে গেছে । চাইলেই এখন একজন ব্যক্তির মুখ অন্য কারো শরীরের উপর ওভাররোল করে দেয়া যায় ।
মৃত্যুর পর কারো মুখ, কণ্ঠ ও ব্যক্তিত্বের অধিকার কার? মৃত্যুর পরে তাদের ক্যারিয়ারের উপর তাদের কোন নিয়ন্ত্রণ থাকবে?
যেসব অভিনেতা অসাধারণ অভিনয় করে জনপ্রিয় ছিলেন হঠাৎ করে তাদের একটি অশ্লীল কমেডি , এমনকি পর্নোগ্রাফিতেও উপস্থিত করলে কি হতে পারে ? তাদের কোন বিজ্ঞাপনে বা অকারণে কোন ব্র্যান্ডের প্রচারের জন্য ব্যবহার করলে কী হবে?
মৃত অভিনেতাদের ডিজিটাল ক্লোনগুলির অনন্তকালের কাজের জন্য আর্থিকভাবে উপকৃত হবে কে ?
এমন অনেক জটিল বিষয়গুলো এখনও অমিমাংসীত।