যাত্রী সংকটের ঢাকা-বরগুনা রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে লঞ্চ চলাচল। মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। এর ফলে প্রভাব পড়তে পারে স্থানীয় বাজারে। পণ্যের অভাব দেখা দিতে পারে স্থানীয় বাজারে যা দাম বাড়ার আশঙ্কা জাগায়।
ঢাকা-বরগুনা রুটে চলাচলরত এম কে শিপিং লাইন্সের বরগুনা ঘাটের ম্যানেজার মো. এনায়েত হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বরগুনা থেকে সড়কপথে মাত্র ছয় ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছানো যায়। কিন্তু লঞ্চে সময় লাগে বেশি। এ কারণে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকেই আমরা যাত্রী সংকটে ভুগছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার আশায় দিনের পর দিন আমরা লোকসান গুনেছি। কিন্তু এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে লাগাতার লোকসান এড়ানোর জন্যই কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এদিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় এ রুটে চলাচলরত যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়বে বলে জানান স্থানীয়রা। এছাড়া লঞ্চে যাত্রী পরিবহন করার পাশাপাশি কম ভাড়ায় পণ্য পরিবহন করা হতো। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখন বিকল্প মাধ্যমে পণ্য পরিবহন করতে হবে ব্যবসায়ীদের। এতে বহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বরগুনা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনার মীর আরাফাত জামান তুষার বিবিএসকে বলেন, ‘ লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থ মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হবে। অনেকে বাসে যাতায়াত করতে পারেন না, অসুস্থবোধ করেন। অনেকেই বেশিক্ষন বসে থেকে যাতায়াত করতে পারেন না, তাদের জন্য বেশ সমস্যা তৈরি হয়েছে।‘
আরাফাত জামানের মতে, লঞ্চ মালিক সমিতি, ব্যবসায়ী সমিতির এক হয়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ। যাতে পণ্য আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটের খরচ ও ট্যাক্স কমানো হয়। ফলে যাত্রী কিছুটা কম হলেও পন্য আনা- নেওয়া করে হলেও লঞ্চ ব্যবসা টিকে থাকে।
তিনি বলেন, ‘ লঞ্চে পণ্য আনা নেওয়ার খরচ সড়ক পথের চেয়ে কিছুটা বেশি যা ব্যবসায়ীদের উপর প্রভাব ফেলে। সেক্ষেত্রে যদি ঘাটের খরচ কমানো যায় তাহলে লঞ্চে পণ্য আনা- নেওয়া বাড়বে যা বাজারেও বেশ ভালো প্রভাব ফেলবে বলে আমি মনে করি।’
বরগুনা জেলা যাত্রী কল্যাণ সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট সঞ্জীব দাস বলেন, বরগুনার ইতিহাস ঐতিহ্যের সঙ্গে লঞ্চ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। শুধু কম ভাড়াই নয়; লঞ্চ ভ্রমণ একটি আনন্দদায়ক ও নিরাপদ ভ্রমণও। লঞ্চ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসব।
লঞ্চ মালিক সমিতি অবশ্য আশার কোনো বানী দিতে পারেননি। কবে এই অচলাবস্থা কাটবে তা এখনই কেউ জানাতে পারেনি।