fbpx

বাজেটে তামাকজাত পণ্যে কার্যকর করারোপ না করার প্রতিবাদে মানববন্ধন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তামাকজাত পণ্যের ওপর কার্যকর করারোপ না করার প্রতিবাদে ১৮টি সংগঠন মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার (১৪ জুন) বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তামাকবিরোধী এ সকল সংগঠন মানববন্ধন করে।

মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা সকল প্রকার তামাকজাত পণ্যের উপর সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি, সুনির্দিষ্ট করারোপ, সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার দাবিতে প্রস্তাবিত বাজেট পুনর্বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বক্তারা বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে করহার অপরিবর্তিত রেখে নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ এবং প্রিমিয়াম স্তর অর্থাৎ ৪টি স্তরেই সিগারেটের দাম বাড়ানো হলেও তা জনস্বাস্থ্য রক্ষায় কোনরূপ প্রভাব ফেলবে না। নিম্নস্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম মাত্র ১টাকা বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে, যা শতকরা হিসাবে বেড়েছে ২.৫৬%, মধ্যম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ২ টাকা বাড়িয়ে ৬৫ টাকা করা হয়েছে যা শতকরা হিসাবে বেড়েছে ৩.১৭%, উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৯ টাকা বাড়িয়ে ১১১ টাকা করা হয়েছে যা শতকরা হিসাবে বেড়েছে ৮.৮২% এবং প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের দাম ৭ টাকা বাড়িয়ে ১৪২ টাকা করা হয়েছে যা শতকরা হিসাবে বেড়েছে ৫.১৮% হারে।

বক্তারা দাবি করেন, বর্তমানে সিগারেটের বাজারের ৭৫ শতাংশই নিম্ন স্তরের দখলে, যার প্রধান ভোক্তা মূলত দরিদ্র ও তরুণ জনগোষ্ঠী। প্রস্তাবিত বাজেটে এই বিপুল পরিমান জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁকিকে উপেক্ষা করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেটে নিম্নস্তরে সিগারেটের দাম বেড়েছে মাত্র ২.৫৬% (প্রতি শলাকা ১০ পয়সা মাত্র)। অন্যদিকে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ধরা হয়েছে ১০% এবং মূল্যস্ফীতি ৫.৬% । অতএব দেখা যাচ্ছে যে মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় প্রকৃত অর্থে সিগারেটের দাম বিগত বছরের তুলনায় কমে গেছে।

২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পুনর্বিবেচনার জন্য তামাক-কর ও দাম বৃদ্ধির কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা মানববন্ধন থেকে দেয়া হয়। সেগুলো হলো-

১। সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা,

২। অভিন্ন করভারসহ সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক প্রচলন করা,

৩। ফিল্টারবিহীন ২৫ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ১১.২৫ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ ও ফিল্টারযুক্ত ২০ শলাকা বিড়ির খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৯.০০ টাকা সুনির্দিষ্ট সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা।

৪। নিম্ন স্তরের জর্দা এবং গুলের কর ও দাম বৃদ্ধিসহ সুনির্দিষ্ট এক্সাইজ শুল্ক প্রচলন করা।

এই প্রস্তাবগুলো কার্যকর হলে-

১। প্রায় ৯ লক্ষ তরুণকে তামাক ব্যবহার থেকে বিরত করা যাবে এবং প্রায় সাড়ে ৪ লক্ষ তরুণ অকাল-মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পাবে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ অর্জনে এটি খুবই সহায়ক হবে।

২। বাড়তি ৯,২০০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করা যাবে। এসডিজির টার্গেট ৩.৪ অর্জনে- ‘২০৩০ সালের মধ্যে অসংক্রামক রোগে মৃত্যু এক-তৃতীয়াংশে নামিয়ে আনার জন্য’ এই বাড়তি রাজস্ব ব্যয় করা যাবে।

৩। নিম্নস্তরের সিগারেটের মূল্য বেশি বাড়ালে নিম্নআয়ের সিগারেট ব্যবহারকারিদের সুরক্ষা করা যাবে। তাদের আয়ের প্রায় ২১% ব্যয় হয় তামাক পণ্যের পেছনে। এই অর্থ তামাক পণ্যের পরিবর্তে শিক্ষায় ব্যয় করলে তাদের সন্তানদের পড়ালেখার মোট ব্যয় ১১% বাড়ানো সম্ভব হবে।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মোঃ মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মো. আবদুস সালাম (সিটিএফকে-বাংলাদেশ), হেলাল উদ্দিন (প্রত্যাশা), সাাগুফতা সুলতানা (এইড ফাউন্ডেশন), এ কে এম খলিল উল্লাহ (নাটাব), রোকেয়া বেগম (তাবিনাজ), রুবিনা ইসলাম (ডরপ), সৈয়দা অনন্যা রহমান (ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট), মো. মাসুদুল হাসান (উন্নয়ন সমন্বয়), মেহেদী হাসান (প্রজ্ঞা), ইব্রাহিম খলিল (বিএনটিটিপি), মাহামুদুল হাসান (ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন), আবু রায়হান (মানস) সহ আরও অনেকে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply