fbpx

বাল্যবিবাহ ঠেকাতে বিনা সুদে ঋণ দেবে আইপিডিসি ফাইন্যান্স

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

প্রথমবারের মতো বাল্যবিবাহ ঠেকাতে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স।

পরীক্ষামূলকভাবে, তিন জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের ৫০ পরিবারকে এই ঋণ দেওয়া হবে। প্রতি পরিবার ১৫ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন।

এই পাইলট প্রকল্প সফল হলে পরে দেশের অন্য জেলাগুলোতেও একইভাবে ঋণ দেওয়া হবে। আমাল ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা ঋণ প্রদানের কার্যক্রমটি পরিচালনা করবে।

একাধিক বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) জরিপে দেখা গেছে, দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর পর বিভিন্ন জেলায় বাল্যবিবাহের ঘটনা বেড়েছে। মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে করোনার মধ্যে ৭ মাসে দেশের ২১ জেলার ৮৪ উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিবাহ হয়েছে। করোনায় মানুষের আয় কমে গেলেও খরচ কমেনি। এই বাড়তি খরচ মেটাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে বাল্যবিবাহের প্রবণতা বেড়েছে বলে জানিয়েছে এই সংস্থা।

আর্থিক খরচ কমাতে অনেকেই অল্প বয়সে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দিচ্ছেন বলেও এইসকল জরিপে উঠে এসেছে। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আমাল ফাউন্ডেশন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইপিডিসি ফাইন্যান্স বাল্যবিবাহ ঠেকাতে বিনা সুদের ঋণ বিতরণ করছে।

আইপিডিসি ফাইন্যান্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘করোনা মহামারির সময়ে আমরা দেশে বাল্যবিবাহের হার বেড়ে যেতে দেখেছি। পরিবারে আয়ের উৎস না থাকায় বাল্যবিবাহের ঘটনা বাড়ছে। আবার অনেক পরিবার মেয়েকে বোঝা মনে করে বলে বিয়ে দিয়ে দিচ্ছে।’

মমিনুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমরা প্রথম পর্যায়ে ৫০ পরিবারকে বিনা সুদে ঋণ দেব। রোজার ঈদের পর ঋণ বিতরণ শুরু হবে। ঋণ নেওয়া পরিবারের যখন আর্থিক অবস্থার উন্নতি হবে, তখন থেকে তারা তা পরিশোধ করতে পারবে।’

সুবিধাবঞ্চিত পরিবারগুলো বিনা সুদের এই ঋণের টাকায় সেলাই মেশিন বা গরু–ছাগল কিনতে কিংবা দোকান খুলে ব্যবসা করতে পারবেন বলেও জানিয়েছে আইপিডিসি।

গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট অপেক্ষাকৃত দারিদ্র্যপ্রবণ। জেলাগুলোতে শিক্ষার হার কম, বাল্যবিবাহের হার তুলনামূলক বেশি। সে জন্য প্রথমেই এ তিন জেলাকে বাছাই করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে এই প্রতিষ্ঠান।

তবে এই ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত মানতে হবে গ্রহীতাদের। প্রথমত, ঋণের জন্য আবেদনকারীর কন্যা সন্তানের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে হতে হবে এবং সেই মেয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার আগে তাকে বিয়ে দেওয়া যাবে না।

কন্যাসন্তানের সর্বনিম্ন উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণের টাকায় ব্যবসা করতে হবে। ব্যবসায় লাভ হওয়ার পর ঋণের টাকা পরিশোধ করা যাবে। অথবা মেয়েসন্তান চাকরি পাওয়ার পর থেকেও ঋণের টাকা পরিশোধের সুযোগ থাকবে।

ঋণপ্রাপ্তির পর আমাল ফাউন্ডেশন আবেদনকারীকে নিজস্ব ব্যবসা গড়ে তোলার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও সুযোগ-সুবিধা পেতে সহযোগিতা করবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply