আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের নির্দেশে আগামী সপ্তাহের ভেতর বন্ধ হচ্ছে দেশটির সব বিউটি সেলুন। এরই সাথে সাথে কর্মহীন হয়ে যাবে এ পেশার সঙ্গে জরিত প্রায় ৬০,০০০ আফগান নারী। দুই বছর আগে দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর তালেবান সরকার মেয়েদের সেলুনগুলোকে কাজ চালিয়ে নেয়ার অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু এবার তারা ভিন্ন পথেই এগোচ্ছে। যদিও আগে থেকেই অবরোধবাসিনী আফগান নারীদের জন্য জিম, পার্ক, শ্রেণীকক্ষের মতো খোলামেলা জায়গাগুলো নিষিদ্ধই ছিল।
বন্ধ হতে যাওয়া বিউটি সেলুনগুলো উপার্জনের একটি ক্ষেত্র ছাড়াও আফগান নারীদের কাছে একটি আবেগের জায়গা হিসেবে পরিচিত। এটি ছিল তাদের জন্য সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার মতো একটি জায়গা। সমস্ত রক্ষণশীলতা ভেঙে নিজের জন্য এবং নিজের পছন্দে নিজেকে একটু সাজানোর জায়গা। কখনো কখনো এই জায়গাগুলোকে এ সকল গৃহবন্দী নারীর আত্ববোধকে পুন্রুদ্ধারের জায়গা হিসেবেও দেখা যেতে পারে।
এখানকার অধিকাংশ নারী যেখানে বোরকা বা হিজাব পরে ঘুরে বেড়ান সেখানে অনেক আফগান নারীই একজন বিউটিশিয়ানের সাথে কাটানো আড্ডাকেই নিজের ব্যক্তি স্বাধীনতা উপভোগের মাধ্যম বলে বিবেচনা করেন।
শুধু আফগান নারী নয় পৃথিবীর সব নারীই নিজেদেরকে বিভিন্ন সাজসজ্জায় গুছিয়ে নিয়ে একটি ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপন করতে খুব ভালোবাসেন। তাই তালেবানদের এই সিদ্ধান্ত এবার তাদের সব ধরনের রক্ষণশীলতা এবং আগ্রাসনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে।
অনেক আফগান নারীই বলেছে যে, এই জায়গাগুলো আসলে তাদের দুঃখ লুকিয়ে রাখার জায়গা এবং এগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা তাদের ব্যক্তিস্বাধীনতার উপর একধরনের সূক্ষ ছুরিকাঘাত।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সেখানে নারী স্বাধীনতা ক্রমাগত কেবল সংকুচিতই হয়ে যাচ্ছে। এখন আফগান নারীর আরেক নাম যেন হতাশা,বেকারত্ব,পরনির্ভরশীলতা।