বাংলাদেশ পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকার তিনটি রাজ্যে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) অতিরিক্ত ক্ষমতা পাচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এখন থেকে নিজের সীমানার ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত গ্রেফতার, তল্লাশি ও জব্দ করার ক্ষমতা পাবেন বিএসএফ কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি সীমান্ত এলাকাগুলোতে ড্রোনে করে অস্ত্র আনা–নেওয়ার ঘটনা বেড়ে যাওয়ার ফলে বিএসএফের আওতাধীন এলাকায় ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশেটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাজ্য তিনটি হলো পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও আসাম।
তবে নতুন এই সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি তিনি তার টুইটারে একটি পোস্টে এর সমালোচনা করে প্রতিবাদ জানিয়ছেন। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। আর ইতোমধ্যে দিল্লির নতুন সিদ্ধান্তে রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসন নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
চরণজিৎ সিং তার করা টুইটে লিখেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সীমানা বরাবর ৫০ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বিএসএফকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়ার সরকারের একতরফা সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানাই। এটা স্বায়ত্তশাসনের ওপর সরাসরি আক্রমণ। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের প্রতি আমার অনুরোধ, অবিলম্বে এ অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন।’
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে ১০টি রাজ্য ও ২টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত অবৈধ কর্মকাণ্ড কমাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এটা নিয়ে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নানা ইস্যু তৈরি হতে পারে।’
তবে এ বিষয়ে পুলিশের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাও ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন তিনি বলেন, বিএসএফের প্রধান কাজ হলো তারা সীমান্ত পাহারা দিবে বা অনুপ্রবেশ ঠেকানো। তারা সেটাতেই সক্ষম নয় সম্প্রতি নানা ঘটনায় তারা তা প্রমাণ করেছে। ওই পুলিশ কর্মকর্তার মতে, এই ক্ষমতা ব্যবহারের ফলে গ্রেফতার ও তল্লাশি নিয়ে স্থানীয় পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফের নিয়মিত বিরোধ তৈরি হবে। তিনি বলেন, তাদের দায়িত্ব সীমান্ত ফাঁড়ির আশপাশের এলাকায়। কিন্তু নতুন পাওয়া ক্ষমতার কারণে তারা রাজ্যের কিছু এখতিয়ারের কাজের মধ্যেও বাগড়া দিতে পারে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী বিএসএফ কর্মকর্তারা পশ্চিমবঙ্গ, পাঞ্জাব ও আসামে গ্রেফতার ও তল্লাশি অভিযান চালাতে পারবেন।
এসব অভিযান চালাতে কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর (সিআরপিসি), পাসপোর্ট আইন এবং ভারতে প্রবেশের আইন প্রয়োগ করতে পারবে বিএসএফ। এসব রাজ্যে ভারত-পাকিস্তান এবং ভারত-বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার ভেতরে পর্যন্ত অভিযান চালাতে পারবে তারা। আগে এই আওতা ছিল ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর পাশাপাশি বিএসএফ নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, ত্রিপুরা, মনিপুর ও লাদাখে তল্লাশি ও গ্রেফতার অভিযান চালাতে পারবে।