বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) থেকে প্রতিষ্ঠা হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি)। সেই বিজিবির এক যুগ পূর্তি আজ।
২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যদের মাধ্যমে পিলখানা হত্যাযজ্ঞের পর ২০১০ সালের এ দিনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নাম নিয়ে এ বাহিনী নতুনভাবে পথ চলা শুরু করে। দিবসটি উপলক্ষে বাহিনীর পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) ফজরের নামাজের পর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরে মসজিদে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাকিল আহমেদ ডিজির সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবি’র রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন এবং সীমান্ত গৌরবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছেন।
সকাল ১০টায় বিজিবি সদর দফতরের বীরউত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে বিজিবি দিবসের আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও অভিবাদন গ্রহণ, বিজিবিতে বীরত্বপূর্ণ ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবি সদস্যদের পদক প্রদান এবং পরে বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার নেবেন।
এছাড়া বিজিবি দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিরাজমান পারস্পরিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ও আস্থা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বিকালে যশোরের বেনাপোল, পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থলবন্দর সংলগ্ন আইসিপিতে বিজিবি-বিএসএফ কর্তৃক জমকালো ‘জয়েন্ট রিট্রিট সিরিমনি’ অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া বিজিবি দিবস উদযাপনের অংশ হিসেবে ২১ ডিসেম্বর সকালে পিলখানায় সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালকের বিশেষ দরবার অনুষ্ঠিত হবে। দরবার শেষে মহাপরিচালক কর্তৃক বিজিবিতে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিজিবি’র কর্মকর্তা ও সদস্যদেরকে পদক ও ইনসিগনিয়া প্রদান করা হবে। এছাড়া অপারেশনাল কার্যক্রম, চোরাচালান নিরোধ এবং মাদকদ্রব্য আটকের ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পুরস্কার প্রদান এবং অনারারি সুবেদার মেজর হতে অনারারি সহকারী পরিচালক ও অনারারি সহকারী পরিচালক হতে অনারারি উপপরিচালক পদে পদোন্নতি প্রাপ্তদের র্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হবে। এ অনুষ্ঠানে বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, উত্তরাধিকারীদেরকে সংবর্ধনা, অনুদান ও উপহার প্রদান করা হবে। এদিন দুপুরে প্রীতিভোজ এবং সন্ধ্যায় পিলখানায় ঢাকা সেক্টর মাঠে বিজিবি’র নিজস্ব অর্কেস্ট্রা ও শিল্পীসহ দেশের বরেণ্য শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষে পিলখানা ছাড়াও ঢাকার বাহিরে বিজিবি’র সব রিজিয়ন, প্রতিষ্ঠান, সেক্টর ও ইউনিট পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন, মিলাদ ও বিশেষ দোয়া, প্রীতিভোজ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন বাহিনীর জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম।
দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাণীতে রাষ্ট্রপতি দেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্বপালনের জন্য বিজিবি সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সীমান্তেরর অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে সীমান্তের সার্বিক সুরক্ষা, চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী-শিশু এবং মাদক পাচার রোধে সীমান্তে নিরবচ্ছিন্ন দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বিজিবি। দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনগণের জানমালের নিরাপত্তাবিধানসহ দুর্যোগকালীন উদ্ধার কার্যক্রমেও এ বাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয়।
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্র্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিজিবিকে বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।