fbpx

বিশ্বের প্রথম ট্রান্সপারেন্ট ফোন নাথিং,পারবে কি আইফোনকে টেক্কা দিতে?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দীর্ঘদিন পর টেক পাড়ায় চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। আইফোনকে টেক্কা দিতে পারে, এমন এক ডিভাইস এসেছে বাজারে। আর এই খবর এখন সবার মুখে মুখে। তবে পুরোনো কোনো কোম্পানি নয়, নতুন এক প্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই ঘটতে পারে এই মহাবিল্পব, দাবি প্রযুক্তিবিশেষজ্ঞদের।

সম্প্রতি লন্ডনভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘নাথিং’ তাদের প্রথম স্মার্টফোন ‘নাথিং ফোন ওয়ান’ এর উন্মোচন করেছে। তাই এ নিয়ে প্রযুক্তিপ্রেমীদের মনে উত্তেজনার কমতিও ছিল না। কেননা এই ফোন তৈরির পেছনে আছেন ওয়ানপ্লাসের সাবেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা কার্ল পেই।

খোদ পেই বলছেন, এ ফোনটি অ্যাপলের আইফোনের বিকল্প হয়ে উঠতে পারবে। ভিন্ন ভিন্ন প্রযুক্তি একত্রিত করাই নাথিংয়ের শক্তি। আর অ্যাপলের শক্তি হচ্ছে, তারা নিজেরাই চিপসেট তৈরি করে এবং নিজেদের তৈরি সব ওএসইএস পরিচালনা করে।

দেখতে খুব সাধাসিধে হলেও ফোনটি দেখে আপনি তার প্রেমে পড়তে বাধ্য। কেননা এর ব্যাক সাইড রাখা হয়েছে ট্রান্সপারেন্ট। অর্থাৎ এর ব্যাটারি-মাদারবোর্ডসহ ফোনের সব যন্ত্রপাতি দেখা যাবে বাইরে থেকেই।

এছাড়া ফোনটির ডিসপ্লে থেকে ক্যামেরা, সবখানেই রয়েছে অভিনবত্বের ছোঁয়া। পেছনে আছে বিশেষ এলইডি প্যানেল, যাকে বলা হচ্ছে ‘গ্লিফ ইন্টারফেস’।

ডিভাইসের ইউনিক ট্রান্সপারেন্ট ডিজাইনের কারণে পেছনের দিকটা অনেকটা উন্মুক্ত মনে হবে। পেছনে ব্যবহৃত স্ক্রর মাথাগুলোও স্পষ্টভাবে দেখা যাবে। আর গোটা ফোনজুড়ে সুন্দর করে জড়িয়ে আছে এলইডি লাইটের নকশা। ফোন এলে কিংবা কোনো নোটিফিকেশন আসলে সেসব নকশা করা বাতি জ্বলে উঠবে। বলা যায়, এই অংশটাই নাথিং ফোনের সিগনেচার।

স্মার্টফোনটি ফ্ল্যাট সাইড এবং রাউন্ডেড কর্নার হওয়ায় এটি দেখতে আইফোনের মতোই। ফোনের ব্যাক প্যানেলে ব্যবহার করা হয়েছে স্পেসিফিক লাইট প্যাটার্ন। ইউজাররা চাইলে এর মধ্যে সাউন্ড এফেক্টও অ্যাড করতে পারবে। এছাড়াও এই ফোনে রয়েছে স্টিরিও স্পিকার এবং হেডফোন জ্যাক। এর ফলে ইউজারদের খুবই সুবিধা হবে।

এই ফোনে রয়েছে ৬.৫৫ ইঞ্চি ফুল এইচডি ১০-বিট ও এলইডি ডিসপ্লে। আছে স্ন্যাপড্রাগন ৭৭৮জি ও ৬এনএম প্রসেসর। সংস্থার দাবি, এই চিপসেট বিশেষভাবে টিউন করেছে কোয়ালকম। ফোনটিতে ১২ জিবি পর্যন্ত র্যাম এবং ২৫৬ জিবি স্টোরেজ রয়েছে। ডিসপ্লে প্যানেলে রয়েছে গরিলা গ্লাস প্রোটেকশন।

স্মার্টফোনটিতে অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েড ১২ ব্যবহার করা হয়েছে। নিজস্ব কোনো ই-মেইল কিংবা ব্রাউজার দেয়া হয়নি। বিল্ট-ইন নতুন কোনো অ্যাপ যুক্ত করা হয়নি।

ঝকঝকে ছবি তোলার জন্য ফোনটিতে রয়েছে, প্যানোরামা নাইট মোড, পোর্ট্রেট মোড, সিন ডিটেকশন, এক্সট্রিম নাইট মোড এবং এক্সপার্ট মোড ফিচার। ফোনের পেছনে দেয়া হয়েছে ৫০ মেগাপিক্সেলের দুটি ক্যামেরা। মেইন ক্যামেরাটিতে আছে সনির আইএমএক্স ৭৬৬ সেন্সর। ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ছবি তুলতে আছে সেকেন্ডারি ক্যামেরা।

এই ফোনে থাকছে সাড়ে ৪ হাজার মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি, ৩৩ ওয়াট ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট। এক ঘণ্টার মধ্যে ফুল চার্জ করা হবে এই ফোন। একবার চার্জে সারাদিন চলবে এই ফোন, দাবি কোম্পানির। এছাড়া অন্যান্য স্পেসিফিকেশনের মধ্যে রয়েছে ফেস আনলকের সুবিধা, ব্লুটুথ ৫.২, ওয়াইফাই ৬ সাপোর্ট, অ্যান্ড্রয়েড আপডেট ও সিকিউরিটি আপডেটের সুবিধাও। তবে ডিভাইসটির সঙ্গে থাকছে না কোনো চার্জার।

আপাতত দুটি রঙে লঞ্চ করা হয়েছে নতুন এই স্মার্টফোন। কালো এবং সাদা এই দুই রঙের মধ্যে থেকেই ক্রেতারা বেছে নেবেন তাদের পছন্দের ফোনটি। নাথিং ফোন ১ এর ৮ জিবি/২৫৬ জিবি ভেরিয়েন্টের দাম ভারতে ৩৫,৯৯৯ টাকা এবং ১২ জিবি/২৫৬ জিবির দাম ৩৮,৯৯৯ টাকা।

ভারতে লঞ্চের পর থেকেই বিতর্কে জড়িয়েছে নাথিং ফোন ১। অনেকেই বলছেন, ফোনের স্ক্রিনে সবুজ আভা দেখা যাচ্ছে। ক্যামেরা মডিউলে আর্দ্রতার সমস্যার অভিযোগও উঠেছে। অবিলম্বে সমস্যা সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছে কোম্পানি।

পরিবেশবান্ধব একটি প্রযুক্তি মানুষকে উপহার দেওয়ার প্রত্যয় নিয়েই এই ডিভাইস বাজারে এসেছে। তাই নাম থেকে শুরু করে ফোনের প্রতিটি স্তরে স্তরে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছে নাথিং কোম্পানি। এখন সময়ই বলে দেবে, গ্রাহক এই ফোনকে কিভাবে গ্রহণ করে এবং তা আদৌ আইফোনকে টেক্কা দিতে পারবে কি-না।

Advertisement
Share.

Leave A Reply