সম্পদশালীদের জন্য রয়েছে দুঃসংবাদ। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে ধনীদেরকেই গুনতে হবে বেশি কর। রাজস্ব আয় বাড়ার কারণে সারচার্জ (সম্পদ কর) বাড়ানো হচ্ছে। আর এই বাজেট বাস্তবায়নে সম্পদশালীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড।
সারচার্জের সাতটি স্তর বর্তমান। তবে এই সারচার্জের স্তর কমিয়ে এনে ৫টিতে নামিয়ে ন্যূনতম সারচার্জ প্রথা বাতিল করা হচ্ছে। এখন নিট সম্পদের মূল্যমান ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত হলে সারচার্জ দিতে হয় না। তবে এই সম্পদের মূল্যমান ৩ কোটি থেকে ৫ কোটি টাকা হলে, বা একাধিক মোটরগাড়ি থাকলে, বা যে কোনও সিটি করপোরেশন এলাকায় ৮ হাজার বর্গফুটের বেশি গৃহসম্পত্তি থাকলে ১০ শতাংশ কর বা ৩ হাজার টাকা ন্যূনতম সারচার্জ দিতে হয়।
সম্পদের পরিমাণ ৫ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ১৫ শতাংশ, ১০ কোটি থেকে ১৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ শতাংশ বা ৫ হাজার টাকা, ১৫ কোটি থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ এবং ২০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের ক্ষেত্রে সম্পদের দশমিক ১ শতাংশ অথবা আয়করের ৩০ শতাংশের বেশি যেটি হয়, সেই হিসাবে সারচার্জ দিতে হয়।
তবে আগামী বাজেটে নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত সম্পদের সারচার্জ দিতে হবে না। ৩ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ, ১০ কোটি থেকে ২০ কোটি পর্যন্ত ২০ শতাংশ, ২০ কোটি থেকে ৫০ কোটি পর্যন্ত ৩০ শতাংশ এবং ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদশালীদের আয়করের ওপর ৩৫ শতাংশ হারে সারচার্জ দিতে হবে।
সারচার্জ বা সম্পদ কর কি?
সারচার্জ বা সম্পদ কর এক ধরনের মাশুল, যা ব্যক্তির সম্পদের দলিলমূল্যের ওপর আদায় করা হয়।
জানা যায়, সর্বপ্রথম ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান শাসনামলে সম্পদ কর (ওয়েলথ ট্যাক্স) চালু করা হয়। সেটি স্বাধীনতার পরও অব্যাহত ছিল। ১৯৮৮ সালে সরকার স্থায়ীভাবে সারচার্জ আদায় করতে অর্থ আইনের মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশে ১৬-এ ধারা যুক্ত করে। অবশ্য নানামুখী চাপে ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছরে সেটি প্রত্যাহার করা হয়। পরে ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে এখনও পর্যন্ত সারচার্জ আরোপ করা হচ্ছে।