অভিনব কায়দায় ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের ভেতরেই এক নারীর কাছ থেকে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে গেছে দুই প্রতারক। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকের মুন্সিগঞ্জ শাখায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ইয়াসমিন বেগম। তিনি মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের কাউয়াদি এলাকার বাসিন্দা।
ইয়াসমিন বেগম জানান, বছরখানেক আগে গ্রামের এক নারীর কাছ থেকে সুদে তিন লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ছেলেকে সৌদি আরব পাঠান। এক বছরে সুদে–আসলে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা হয়েছে। সেই টাকা বুধবার পরিশোধ করার কথা ছিল। কয়েক দিন আগে ছেলে বিদেশ থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা পাঠান। বাকি টাকা গ্রামের আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার করেন।
ইয়াসমিন আরও বলেন, ছেলের পাঠানো টাকা তুলতে তিনি সকালে ব্যাংকে আসেন। ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা তোলার পর ব্যাংকের ভেতরে বসে গুনছিলেন। এ সময় মধ্যবয়সী দুজন ব্যক্তি তার দুই পাশে বসেন। সেই টাকার মধ্যে কয়েকটি নোট ছেঁড়া ছিল। তিনি ছেঁড়া নোটগুলো পাল্টানোর জন্য চেয়ার থেকে উঠছিলেন। এসময় তার পাশে বসা এক ব্যক্তি বলেন, তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে এসেছেন। তিনি ছেঁড়া নোট পাল্টে ভালো নোট দিচ্ছেন। এরপর টাকা গুণে দিতে সাহায্য করার নাম নিয়ে সব টাকা তার কাছ থেকে নিয়ে নেন। কিছুক্ষণ পর তারা ৩৭টি ১ হাজার ও ৫০টি ১০০ টাকার নোট (৪২ হাজার টাকা) ফেরত দিয়ে বাকি ৮১ হাজার টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান।
ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৭ মিনিটে ওই নারী ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা তুলছেন। এ সময় দুজন পুরুষ তার আশপাশে ছিলেন। টাকা তুলে ইয়াসমিন চেয়ারে বসার পর পাঞ্জাবি পরা একজন এবং শার্ট পরা আরেকজন মধ্যবয়সী ব্যক্তি তার দুই পাশে বসেন। তারা দুজন ইয়াসমিন বেগমের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তবে সিসিটিভি ফুটেজ ঝাপসা থাকায় তাদের কারও চেহারা সেভাবে বোঝা যাচ্ছিল না।
ভুক্তভোগী ওই নারী বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থেকে কত কষ্ট করে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে দেশে পাঠাল। ভেবেছিলাম, আজ ছেলের সব ধার শোধ করব। ব্যাংকের ভেতর থেকে প্রতারক চক্র আমার সব নিয়ে নিল। আমি এখন কীভাবে বাড়িতে যাব? কীভাবে ছেলের ধার শোধ করব?’
এ প্রসঙ্গে ডাচ্ বাংলা ব্যাংক মুন্সিগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।