fbpx

ব্যাখ্যা দিলেন অনন্ত জলিল

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বাংলাদেশ ও ইরানের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘দিন: দ্য ডে’র বাজেট ১০০ কোটি নয়, সিনেমাটির প্রকৃত বাজেট পাঁচ লাখ মার্কিন ডলার; যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ কোটি ৭৪ লাখ ৯৭ হাজার ৩৩০ টাকা। এমনটাই জানান ইরানি নির্মাতা ও এই সিনেমার সহপ্রযোজক মোর্তেজা অতাশ জমজম। এমনকি দাবি উপস্থাপনে বাজেটের চুক্তিপত্রটি নিজের ইনস্টাগ্রামে প্রকাশ করেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন অনন্ত জলিল।

শনিবার (২৭ আগস্ট) ‘দিন: দ্য ডে’র বাজেট বিতর্ক ও ইরানি নির্মাতা মোর্তেজা অতাশ জমজমের বেশ কিছু অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়েছেন অনন্ত জলিল। তার সেই বিবৃতি তুলে ধরা হলো-

প্রিয় বন্ধুগণ, কিছুদিন ধরে সোশ্যাল মিডিয়াতে ‘দিন: দ্য ডে’র বাজেট নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। মিস্টার মোর্তেজা অতাশ জমজম, ইরানি ডিরেক্টর এবং প্রডিউসার (‘দিন: দ্য ডে’র ইরানি অংশের)। তিনি বাংলায় একটি এগ্রিমেন্ট পোস্ট করেন। যাতে দেখানো হয়েছে, তাকে আমার ৪-৫ লাখ ডলার দেওয়ার কথা; তা থেকেই আপনারা নিউজ করে যাচ্ছেন মুভিটির বাজেট ৪ কোটি টাকা।

বাংলায় এগ্রিমেন্ট পোস্ট করার কিছুদিন আগে তার ইনস্টাগ্রামে আরও একটি লেখা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি বলেন, আমি তার এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী পেমেন্ট করি নাই এবং ইরানিদেরকে আমি পেমেন্ট করি নাই। এমনকি তিনি বলেছেন, মুভিটি আমি আমার মত করে বানিয়েছি। আমি এক এক করে তার এই পোস্টের ব্যাপারে আসল সত্যটা আপনাদের সামনে তুলে ধরছি।

১. এটা (‘দিন: দ্য ডে’) যৌথ প্রযোজনার মুভি দুটি দেশের মধ্যে। সুতরাং বাংলা কোন এগ্রিমেন্ট গ্রহণযোগ্য হয় কিনা তা আপনাদের সবারই জানা। যারা খুব উৎসাহ নিয়ে আমার সমালোচনা করছেন মিস্টার মোর্তেজার সঙ্গে কাধ মিলিয়ে, তাদেরই কেউ না কেউ এই কাজটি করেছেন; যা আমি হলফ করে বলতে পারি। এই এগ্রিমেন্ট সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট।

২. এবার আসি আমার মন গড়া ভাবে মুভিটি বানানোর ব্যাপারে। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি, বাংলাদেশে শুটিংয়ের সময়ও ইরান থেকে ১৭ জনের একটি টিম নিয়ে আসেন মিস্টার মোর্তেজা। আপনারা মিশা ভাই ও খোরশেদ আলম ভাইকে সবাই চিনেন, তাদেরকে একবার ফোন করে জিজ্ঞেস করবেন। মিশা ভাইসহ অন্যান্য বাংলাদেশি আর্টিস্ট ছিলেন, শুটিংয়ে একবারও আমি কোনো ডিরেকশন দিয়েছি কিনা জানতে পারবেন। মিস্টার মোর্তেজা সাহেবের সঙ্গে আমাদের দেশের একজন গুণী ডিরেক্টর ছিলেন, তার নাম মিস্টার শেখ জামাল। তিনিও এই ইন্ডাস্ট্রিতে ৩৫ বছর ধরে কাজ করেন। তারা একত্রে মিলে (মিস্টার মোর্তেজা ও শেখ জামাল) বাংলাদেশের শুটিং পরিচালনা করেন।

৩. আপনারা মুভিটি দেখেছেন। কিছু অংশ বাংলাদেশ ছাড়া মুভিটির বড় অংশগুলো ৩টি দেশ মিলে শুটিং হয়েছে। সে দেশের আর্টিস্ট, টেকনিশিয়ানসহ সমস্ত কিছু মিস্টার মোর্তেজা এ্যারেঞ্জ করেছেন এবং শুটিং সম্পন্ন করেছেন। তাদের সঙ্গে আমাদের বাংলাদেশের কিছু টেকনিশিয়ান কাজ করেন। তবে আমাদের টেকনিশিয়ানরাও তাদের সঙ্গে পারফেক্ট ভাবে কাজ করতে পারেনি। কারণ তাদের এক একজনের এক এক ভাষা। অথচ তিনি খুব সুন্দরভাবে একটি স্ট্যাটাস দিলেন যে, আমি মুভিটি আমার মত করে বানিয়েছি। এই কথাটা যে কতটা সত্য, কতটা যৌক্তিক তা যাচাই করার সময়ও আপনাদের নেই। ব্যাস, শুরু হয়ে গেল আপনাদের সমালোচনা করা।

৪. এবার আসি মুভিটির বাজেট নিয়ে। মুভিটির শুটিং শুরু হয় ২০১৯ সালে এবং শেষ হয় ২০২০ সালে। আপনারা আমার ইন্টারভিউগুলো দেখতে পারেন। টেলিভিশন, নিউজপেপার, অনলাইন নিউজ, সোশ্যাল মিডিয়াতে- কোথাও বলিনি আমি এই মুভিটির ইনভেস্টর। আমি সবসময় বলে এসেছি, শুধুমাত্র বাংলাদেশের শুটিংয়ের ইনভেস্টর আমি। ২০২১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি লা-মেরিডিয়ান হোটেলে ‘দিন: দ্য ডে’ এবং ‘নেত্রী দ্য লিডার’ মুভির একটি অনুষ্ঠান করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে মোর্তেজা, ইরানের আর্টিসগণ উপস্থিত ছিলেন। মুর্তজা প্রেস কনফারেন্সের সময় আমাকে বলেন শুটিংয়ে তিনি যে বাজেট নির্ধারণ করেছিলেন, তার চেয়ে তিনি অনেক বেশি অর্থ শুটিংয়ে খরচ করেছেন। মিস্টার মুর্তজার বলা এমাউন্টটা আমি প্রেস কনফারেন্সে বলি এবং আমার ইন্টারভিউগুলোতেও একই কথা বলি।

মিস্টার মোর্তেজা তুলে ধরেছেন, আমার ৪-৫ লক্ষ ডলার তাকে শুটিং খরচের জন্য দেওয়ার কথা। এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সম্পূর্ণ টাকা দেই নাই। আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, এসপার এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমার দেওয়ার কথা, সে অনুযায়ী বাংলাদেশের শুটিং এর সমস্ত খরচ আমি বহন করি। সেখানে ১ কোটি টাকা লাগলো নাকি ৪ কোটি টাকা লাগলো সেটা তো মিস্টার মোর্তেজার দেখার কথা না। বাংলাদেশের শুটিং খরচ ছাড়া বিদেশের কোনো শুটিং খরচই আমার দেওয়ার কথা না। শুধুমাত্র আমাদের ট্রাভেলিং কস্ট ছাড়া, মিনস এনায় টিকিট ছাড়া। সেখানে আমি তাকে ডলার দিবো এই প্রশ্ন উঠবেই বা কেন?

তাহলে মিস্টার মোর্তেজা এতগুলো দেশে যে শুটিং করলো তাতে তো তার কোন টাকাই খরচ হয় নাই। তিনি যে এমাউন্ট বলেছেন, আমার দেওয়ার কথা সেটাই আপনারা মুভির বাজেট বলে নিউজ করেছেন। তাহলে তিনি কীভাবে বলেন, আমি তাকে এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী টাকা দেই নাই। আর আপনারা তা ফলাও করে প্রচার করছেন।

আমরা যখন বিদেশে শুটিংয়ে যাই, মোর্তেজা আমাদেরকে অনেক সম্মান দিয়েছেন। ফাইভ স্টার হোটেলে রেখেছেন। এমনকি তার বাসায়ও দুইদিন আমাদের ফুলটিমকে দাওয়াত দিয়েছেন। আমি ঠিক একইরকমভাবে ইরানের ১৭ জনের টিমকে সোনারগাঁও হোটেলে রাখি ১৮ দিন। তাদের ফুলটিমকে আমরা অনুরূপ সম্মান দিয়েছি। মোর্তেজার সঙ্গে আমার কখনও কোনো মতভেদাভেদ বা খারাপ সর্ম্পক হয় নাই। কে বা কারা নিজের স্বার্থের জন্য মুর্তজার সঙ্গে আমার এই দ্বন্দের সৃষ্টি করেছেন, তারাই ভালো জানে এবং মোর্তেজাই বলতে পারবেন। যাদের স্বার্থের জন্য এই ষড়যন্ত্র করেছেন তাদের মুখোশ একদিন ঠিকই মিস্টার মোর্তেজাই প্রকাশ করবেন বলে আমার আত্মবিশ্বাস।

Advertisement
Share.

Leave A Reply