ভারতের দুই শিশু প্রথম ও আয়ুষ। তারা দুই ভাই-বোন। প্রথমের বয়স পাঁচ বছর আর আয়ুষের বয়স ১০ মাস। এ বছর এপ্রিলেই করোনা আক্রান্ত হয়ে তাদের বাবা-মা মারা যান।
অবুঝ এই শিশুদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। কেন তাদের বাবা-মা ঘরে ফিরে আসছেন না সেটুকু বোঝার বয়সও হয়নি তাদের। স্বজনরা জানিয়েছেন, প্রথম ভাবছে তার বাবা-মা কাজে গেছেন। তারা কখন ফিরে আসবে এই প্রশ্নই ঘুরে ফিরে করছে এই শিশু।
বাবা-মা না থাকায় আত্নীয়রা তাদের দায়িত্ব নেয়ার জন্য যোগাযোগ করে একটি বেসরকারি এতিমখানার সাথে। তারা আশা করছে হয়তো প্রথম ও আয়ুষকে কেউ দত্তক নিতে পারে।
একই রকম পরিস্থিতিতে পড়েছে ১২ বছর বয়সী কিশোরী সোনিয়া ও তার ছোট ভাই অমিত। গেল এক বছরে বাবা-মা দুজনকেই হারিয়েছে তারা। শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তার দাদি। তবে অন্য কারো কাছে দত্তক দিতে চাইছেন না তিনি।
সংবাদ মাধ্যম বিবিসিকে তাদের দাদি জানান ‘আমার পরে এদের কে দেখবে? ওরা আমার উত্তরাধিকারী। অনেকেই দত্তক নেয়ার জন্য আমার কাছে এসেছেন। কিন্তু আমি ওদের কিভাবে দূরে পাঠাই?’
ভারতে এরকম ঘটনা এখন আর বিচ্ছিন্ন নয়। গোটা দেশ জুড়েই করোনায় প্রাণহানিতে অনাথ হয়েছে এমন হাজারো শিশু।
দেশটির নারী ও শিশু কল্যান বিষয়ক মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি সম্প্রতি এক টুইটার বার্তায় জানিয়েছেন, চলতি বছর ১ এপ্রিল থেকে ২৫ মে বাবা-মাকে হারিয়েছে অন্তত ৫৭৭ শিশু। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
এই অবস্থায় করোনার কারণে অনাথ হওয়া শিশুদের অর্থ সাহায্যের ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তহবিল থেকে প্রতিটি শিশুকে দেয়া হবে প্রায় ১০ লাখ রুপি। যেটা তারা ১৮ থেকে ২৩ বছর পর্যন্ত উপবৃত্তির মত পাবে।
তবে দত্তক নেয়ার বিষয়ে দেশটির আইন বেশ কঠিন। গেল বছর মার্চ থেকে চলতি বছর এ পর্যন্ত দত্তক নেয়া হয়েছে ৩ হাজার ৩৫১ টি শিশুকে। যদিও লাখো শিশু রয়েছে এতিম খানাগুলোতে। করোনার কারণে এই সংখ্যা বাড়তে থাকায় ঝুঁকির মুখে পড়ছে এই শিশুরা।