fbpx

ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন সংশোধন জরুরি: টিক্যাব

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ডিজিটাল খাতের ভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ সংশোধন জরুরি বলে দাবি করেছে টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)।

মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ‘বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস’ উপলক্ষে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ  দাবি জানান টিক্যাব’র আহ্বায়ক মুর্শিদুল হক।

তিনি বলেন, “আজ বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে ভোক্তা অধিকার দিবস। ১৯৬২ সালের এই দিনে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি ভোক্তার স্বার্থ রক্ষার বিষয়ে চারটি অধিকার সম্বন্ধে আলোকপাত করেন। ১৯৮৫ সালে কেনেডি বর্ণিত চারটি মৌলিক অধিকারকে আরও বিস্তৃত করে অতিরিক্ত আরও আটটি মৌলিক অধিকার সংযুক্ত করে জাতিসংঘ। কেনেডির ভাষণের দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস হিসাবে বৈশ্বিকভাবে পালন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য—‘ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় ন্যায্যতা’। একুশ শতকের  উন্মৃক্ত বাজার ব্যবস্থার যুগে নিরাপদ, মানসম্পন্ন, স্বাস্থ্যসম্মত পণ্য ও সেবা পাওয়া প্রত্যেক ভোক্তার অধিকার। দেশের ভোক্তাদের অধিকার সংরক্ষণে নবম জাতীয় সংসদে, ‘ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯’ প্রণয়ন করা হয় এবং ২০১০ সালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু দেশের ১৬ কোটি ভোক্তার অধিকার সংরক্ষণে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের জনবল খুবই নগণ্য। জনবল সংকট থাকায় প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিংসহ ভোক্তা স্বার্থরক্ষার কার্যক্রম পরিচালনা অধিদপ্তরের পক্ষে চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠছে। তাই জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে আরও জনবান্ধব ও শক্তিশালী করতে হবে।‘

মুর্শিদুল হক আরও বলেন, ‘অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ এ দেশের প্রচলিত পণ্যের গ্রাহদের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের গ্রাহকদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ নেই। সম্প্রতি বিভিন্ন ই—কমার্স প্রতিষ্ঠানের জালিয়াতি, ডিজিটাল আর্থিকখাতে প্রতারণা, মোবাইল  ব্যাংকিং—এ প্রতারণা, অনলাইনে অবৈধভাবে ঋণদানের নামে প্রতারনা, ই—টিকেটিং এর ক্ষেত্রে মনগড়া সার্ভিস চার্জ আদায় এরই প্রমাণ। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিভিন্ন উদ্যোগ ও ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে নতুন নতুন ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি দেশের ডিজিটাল মাধ্যমে একটি বিশাল ভোক্তা গোষ্ঠীর সৃষ্টি করেছে। এ অবস্থায় ই—কমার্স সেবা, অনলাইন রাইড শেয়ারিং, অনলাইন ফুড ডেলিভারী সিস্টেম, ই—টিকেটিং, বিভিন্ন সফটওয়্যার, ওয়েবসাইট ও অ্যাপের ক্রেতা, অনলাইনে বিভিন্ন সেবার গ্রাহক, মোবাইল ব্যাংকিং খাতের গ্রাহক এবং টেলিকম সেক্টরের ভোক্তাদের অধিকার রক্ষার বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে আইনের মাধ্যমে রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি।‘

টেলি কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিক্যাব)’র আহ্বায়ক আরও বলেন, “বিদ্যমান আইন  অনুযায়ী কোন ভোক্তা যদি তার পণ্য বা সেবা নিয়ে অভিযোগ জানাতে চায় তাহলে তাকে ৩০ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা অধিদপ্তরের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করতে হয়। এরপর রয়েছে শুনানী ও প্রয়োজনে আদালতের দীর্ঘসূত্রতা। যা অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকদের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের সুযোগ নিতে নিরুৎসাহিত করে। এ আইনকে আরো জনপ্রিয় ও সহজলভ্য করতে গ্রাহক অভিযোগ ও তা নিষ্পত্তির বিষয়টি অনলাইন মাধ্যমে করা যেতে পারে।

ইতোমধ্যে প্রান্তিক পর্যায়ের ভোক্তারা যাতে সহজে অভিযোগ করতে পারে সেজন্য আজ চালু করা হচ্ছে ‘ভোক্তা বাতায়ন’ শীর্ষক হটলাইন সার্ভিস, যার নাম্বার ১৬১২১। এর মাধ্যমে তৃণমূল পর্যায়ের ভোক্তারাও অভিযোগ দায়েরের সুযোগ পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

টিক্যাব মনে করে, অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি অভিযোগ নিষ্পত্তিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। দ্রুততার সাথে ১৫ দিনের মধ্যে অভিযোগ নিষ্পত্তি করলে সারাদেশের প্রতারিত গ্রাহকরা অভিযোগ করতে উৎসাহিত হবে এবং অসাধু ব্যবসায়ীদেরও অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply