fbpx

মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে ডুব দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

কোনো মানুষ যদি একটি জাতির প্রত্যাশার স্মারক হয়ে পদক্ষেপ ফেলেন, তখন তার অকালপ্রয়াণ কেবল দীর্ঘশ্বাসে শেষ হয় না, তা হয়ে ওঠে হাহাকার। আর সে রকমই হাহাকার ছিল একজন  চলচ্চিত্রকারের অকালপ্রয়াণে। তিনি তারেক মাসুদ।

নিজের ৫৫ বছরের জীবনে তারেক মাসুদ এমন এক জীবনযাপন করেছেন যেখানে তিনি দেশের ইতিহাস থেকে শুরু করে রাজনীতি, সংস্কৃতির গভীর থেকে গভীরতর বিষয়ে ভ্রমণ করেছেন।

মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে ডুব দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ

এক সৃষ্টিশীল, বুদ্ধিবৃত্তিক পরিচালক তারেক মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

 

খুব কাছ থেকে তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতির উত্তাপ টের পেয়েছিলেন, ডুব দিয়েছিলেন নিজের মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে। নিজের ভাসা ভাসা ধারণার বাইরে গিয়ে সত্যিটা জানার সাধনায় নিবিষ্ট হয়েছেন সবসময়।

মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে ডুব দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ

সিনেমাই ছিল তার ধ্যান- জ্ঞান। ছবি: সংগৃহীত

তিনি শুধু নিজের অর্জন চাননি, চেয়েছেন তার কাজের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্জন। তিনি এমন সব কাজ করতে চেয়েছেন যা সময়ের প্রবাহে দীর্ঘ পরিসরজুড়ে প্রভাবিত করে চলে অগণিত মানুষ ও প্রজন্মকে। তারেক মাসুদের জীবন ও কর্ম তার অর্জনের স্মারক হয়ে আমাদের সামনে হাজির আছে।

তারেকের স্বপ্নকে বাস্তবায়নের জন্য তার পথের পথিক হয়েছিলেন ক্যাথরিন মাসুদ। আসলে, তারেক ও ক্যাথরিন মাসুদের যুগল জীবন বাংলার শিল্পসাধনার পথে উদাহরণযোগ্য সৃষ্টিশীল যৌথতার ইতিহাস। তাদের নিজেদের পারস্পরিক আলোচনা-তর্কের মধ্যে তাদের প্রতিটি কাজ সমৃদ্ধ হয়েছে।

মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে ডুব দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ

তারেক মাসুদের সত্যিকারের সতীর্থ ছিলেন ক্যাথরিন মাসুদ। ছবি: সংগৃহীত

এমন বৃদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতাসম্পন্ন চলচ্চিত্র নির্মাতা এই সময়ে বাংলাদেশে দ্বিতীয়টি আছে কিনা সন্দেহ। তিনি এমন একজন চিন্তাশীল চলচ্চিত্রকার ছিলেন যার খুব সামান্যই আমরা পেয়েছি। বিভিন্ন সময়ে তার বক্তৃতা ও সাক্ষাৎকার শুনলেই বোঝা যায়, কী ভীষণ দূরদৃষ্টিসম্পন্ন চিন্তাবিদ ও দার্শনিক অভিজ্ঞানে সমৃদ্ধ একজন মানুষের সচেতন কথামালা।

মাটি ও মানুষের সংস্কৃতির শিকড়ের গভীরে ডুব দিয়েছিলেন তারেক মাসুদ

ছবি: সংগৃহীত

তিনি খুব করে চাইতেন, বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি টিকে থাকুক। কারণ, ইন্ডাস্ট্রি  চলচ্চিত্রের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখে। তিনি মনে করতেন, যদি দেশের জনপ্রিয় ধারার চলচ্চিত্র একেবারে হারিয়ে যায় তবে দেশের চলচ্চিত্র-সংস্কৃতি হুমকির মুখে পড়বে। যদি সিনেমা হল না থাকে তবে চলচ্চিত্রের যে সামাজিক প্রভাব, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটা দেশের কারও জন্যই ভালো হবে না। সবার উচিত ইন্ডাস্ট্রিকে বাঁচিয়ে এর ভেতরে চিন্তাশীল মানুষদের সংখ্যা বাড়ানো। যাতে ইন্ডাস্ট্রির ভেতর থেকে এর শক্তি তৈরি হয়।

তারেক মাসুদকে হারিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র অভিভাবক হারিয়েছে। এই অভাব অপূরণীয়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply