fbpx

মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশের তৈরি প্রথম রকেট

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

আগামী মার্চের মধ্যে বাংলাদেশে তৈরি প্রথম রকেট উড্ডয়নের অপেক্ষায় রয়েছে। বুধবার রাজধানীর বিএএফ শাহীন হলে এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএএইউ)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২-এর বিজয়ী উদ্ভাবকদের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে রকেট তৈরির আইডিয়া দিয়ে দুই জন উদ্ভাবককে রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ-২০২২ এর সেরা উদ্ভাবক হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক।

শিক্ষামন্ত্রী এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী পুরস্কার হিসেবে বিজয়ী উদ্ভাবক আজাদুল হককে (ব্রিজ টু বাংলাদেশ) ১ কোটি টাকা এবং উদ্ভাবক নাহিয়ান আল রহমান অলিকে (ধুমকেতু এক্স) ৫০ লাখ টাকার সিডমানি এবং সার্টিফিকেট তুলে দেন। রকেট নির্মাণ-উৎক্ষেপণ, উড্ডয়ন-পরীক্ষণ, গবেষণা-উন্নয়ন এবং এসংক্রান্ত অন্যান্য কার্যক্রমে আগ্রহ বৃদ্ধি এবং দেশে একটি রকেট্রি ইকোসিস্টেম তৈরির লক্ষ্যে এটুআই এবং বিএসএমআরএএইউ-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২ আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতায় সারাদেশ থেকে আসা ১২৪টি উদ্ভাবনী আইডিয়া থেকে প্রাথমিক যাচাই-বাছাই, বুটক্যাম্প, গ্রুমিং এবং টেকনিক্যাল ইভালুয়েশন প্যানেলসহ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে বিচারকমন্ডলী দুইটি আইডিয়াকে পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।

মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশের তৈরি প্রথম রকেট

উদ্ভাবক আজাদুল হক বাংলাদেশে মডেল রকেট উৎক্ষেপণের জন্য ইকোসিস্টেম বা সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া তৈরির পাশাপাশি রকেট্রি গবেষণা এবং উন্নয়নে একটি সংবেদনশীল এবং নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্র তৈরি করবেন। উদ্ভাবক নাহিয়ান আল রহমান অলি-এর ধুমকেতু ০.১ এর নকশা পরীক্ষা করার জন্য একটি প্রোটোটাইপ রকেট, রকেট উৎক্ষেপণ এবং নিয়ন্ত্রণ করতে নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এটি ১০,০০০ ফুট থেকে ৩০,০০০ ফুট দূরের বায়ুমণ্ডল পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম এবং এতে দেশের মহাকাশ প্রযুক্তির যাত্রার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশের তৈরি প্রথম রকেট

অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের পাশাপাশি মহাকাশ গবেষণায় উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে মহাকাশ বিষয়ক উচ্চ শিক্ষার জন্য সরকার ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন এন্ড অ্যারো স্পেস বিশ্ববিদ্যালয়। এছাড়া মহাকাশ গবেষণায় দেশীয় সক্ষমতা অর্জনে একদল দক্ষ পেশাদার মানব সম্পদ তৈরির উদ্দেশ্যে ল্যাবরেটরি প্রতিষ্ঠা করার কার্যক্রমও চলমান রয়েছে। এধরনের গবেষণা খাতের উন্নয়নে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান একসাথে কাজ করতে পারলেই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ দ্রুত বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। স্বাধীনতার মাস মার্চেই বিজয়ী উদ্ভাবকদের তৈরি রকেট উড্ডয়ন করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি আমরা।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্বল্প ও দীর্ঘ পরিকল্পনা প্রণয়ন করছি, যার মূল স্তম্ভ হবে চারটি-স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটি। আমাদের সকল পেশার কর্মকর্তাদের পাশাপাশি নাগরিকদের বুদ্ধিদীপ্ত ও উদ্ভাবনী হিসেবে গড়ে তুলে স্মার্ট সিটিজেন হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সরকারের সকল কার্যক্রমে পেপারলেস অফিস বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে একটি স্মার্ট গভর্ণমেন্ট তৈরি করা হবে। স্মার্ট এগ্রিকালচার, স্মার্ট হেলথ কেয়ারসহ সকল কার্যক্রম নিয়ে আমরা একটি স্মার্ট সোসাইটি গঠন করবো।

প্রতিমন্ত্রী উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করার উপর গুরত্বারোপ করে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে প্রয়োজন হলে আমরা প্রতি রাউন্ডে পাঁচ কোটি টাকা পর্যন্ত ফান্ড দিতে প্রস্তুত আছি।

মার্চে উড্ডয়নের অপেক্ষায় বাংলাদেশের তৈরি প্রথম রকেট

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, ২০৪১ সালে আমরা আমাদের নিজস্ব লঞ্চিং প্যাড থেকে নিজস্ব রকেট লঞ্চ করার উদ্দেশ্যেই এই রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ শুরু করেছি। পরবর্তীতে আমরা স্পেস অ্যাপস, হ্যাকাথন, মার্স রোভার চ্যালেঞ্জসহ আরো কিছু নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করবো।

উল্লেখ্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ-এর বাস্তবায়নাধীন ও ইউএনডিপি এর সহায়তায় পরিচালিত ‘এটুআই’ এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমআরএএইউ)-এর যৌথ উদ্যোগে বিগত ২০২২ সালের ২৫ আগস্ট থেকে ‘রকেট্রি ইনোভেশন চ্যালেঞ্জ ২০২২’ এ অংশগ্রহণের জন্য আইডিয়া জমা নেওয়া শুরু হয়। রকেট্রি এর প্রতি আগ্রহীদের গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে স্কুল/কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়কে সম্পৃক্ত করা ও উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে এই প্রতিযোগিতা চালু করা হয়।

মডেল রকেটের নকশা তৈরি, নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের জন্য নিরাপদ ইকোসিস্টেম তৈরির উদ্দেশ্যে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হচ্ছে। যা বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল এবং গণিত এর শিক্ষার্থীদের মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী করে তুলবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply