রাজধানীর মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বর্ধিত মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) চলমান প্রকল্পের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মন্তব্য করেছেন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টিটিপাড়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলেছিল, সিটি করপোরেশন যে নর্দমার কাজ করছে, সেটি মেট্রোরেলের কাজের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। কিন্তু সরেজমিন এর ঠিক উল্টো চিত্র দেখা গেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এই প্রকল্প সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক। ঢাকাবাসীকে জলাবদ্ধতায় রেখে ওপর দিয়ে কাজ করলে হবে না।‘
কমলাপুর এলাকার জলাবদ্ধতা প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, ‘মেট্রোরেল মতিঝিল শাপলা চত্বর পর্যন্ত এসেছে, সেটা এখন বর্ধিত করে কমলাপুর স্টেশন পর্যন্ত আসবে। এর কারণে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা যেন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।‘
ঘরে বসে পরামর্শ দিয়ে করা নকশা কার্যকর নয় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, সরেজমিন প্রতিটি সংস্থার সঙ্গে, বিশেষ করে সিটি করপোরেশনের সমন্বয় করা ছাড়া যদি নকশা করা হয়, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।
পদ্মা সেতুর রেল সংযোগের কারণে কদমতলী এলাকার দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা এবং একই কারণে শ্যামপুর এলাকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানে গ্যাসের লাইন বন্ধের বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে মেয়র তাপস বলেন, এ ত্রুটি অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুঃখজনক। জলাবদ্ধতা নিরসনে যে কার্যক্রম পরিদর্শনে এসেছি, এখানেও নতুন করে এমআরটি লাইন স্থাপনের জন্য তারা আবেদন করেছে। দেখা যাচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনার সঙ্গে তাদের পরিকল্পনা সাংঘর্ষিক হচ্ছে। তেমনি শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলের জন্য আমরা বৃহৎ কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। কিন্তু পদ্মা রেলসেতুর যে কার্যক্রম সেই কার্যক্রমের কারণে পানি নিষ্কাশনের মুখগুলো বন্ধ করে দিয়েছে। যার কারণে এখন পুরো শ্যামপুর শিল্পাঞ্চল এই সময়েও জলাবদ্ধতায় নিমগ্ন। তাহলে বর্ষা মৌসুমে কী হতে পারে, সেটা চিন্তা করলে আতঙ্ক চলে আসে।’
ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ প্রসঙ্গে মেয়র আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বারবার বলেছি, তাদের অনুরোধ করেছি, আমাদের কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন সেখানে কালভার্ট করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে। কিন্তু তারা কোনো নজর দিচ্ছে না। এভাবে বিভিন্ন সংস্থা ঢাকাকে পুঁজি করে অপরিকল্পিতভাবে আমাদের সঙ্গে কোনো সমন্বয় ছাড়া কাজ করছে। এতে ঢাকাবাসীর দুর্ভোগ দিন দিন শুধু বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
এ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে এরই মধ্যে নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।