রাজধানীর বাসাবাড়িতে গ্যাস সংকট চরমে পৌঁছেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন শহরবাসী। সকাল থেকেই শুরু এ সমস্যা। কোথাও গ্যাস একেবারেই নেই। চুলায় গ্যাসের চাপ খুব কম কোথাও। এ সংকট বাড়াচ্ছে গৃহস্থালি ভোগান্তি।
গ্যাস সংকট নিয়ে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে মোহাম্মদপুর, ধানমণ্ডি, হাজারীবাগ, মিরপুর, শেওড়াপাড়া, পীরেরবাগ এলাকা থেকে।
মিরপুরের বাসিন্দা রাশিদা বেগম বিবিএস বাংলা’কে বলেন, ‘গ্যাস কখন আসে, কখন যায়- তার কিছুই বুঝি না। সকালের নাস্তা, দুপুর-রাতের খাবার সব রান্না নিয়েই ধকল পোহাতে হচ্ছে। কোনো কোনো দিন বাইরে থেকে খাবার কিনে আনতে হয়। বাইরের খাবার খেতে পারি না। এর খরচও বেশি। এখন বাধ্য হয়ে হোটেল থেকে খাবার আনাতে হচ্ছে।’
গ্যাসের অভাবে অনেক বাসার গৃহকর্তী মাটির চুলা ব্যবহার করছেন রান্নাঘরে। প্রযুক্তি শীর্ষের এ যুগে যেটি কাম্য হতে পারেনা কোনোভাবেই।
মোহাম্মদপুরের হোমমেকার আফরীন শিমুল বলেন, ‘আমরা ঘরের মেয়েরা বেশি সমস্যা পড়ছি। সকালে বাচ্চাদের নাস্তা বানাতে হয়। তখন গ্যাস থাকে না। বিকালের দিকে একটু গ্যাস আসে। তাও এর চাপ কম। সেই সময়ের মধ্যেই সব রান্না করে ফেলার চেষ্টা করি। কবে এ ঝামেলা মিটবে জানি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায়ই গ্যাসের চাপ কম থাকে। আধাঘণ্টার রান্না শেষ করতে তিন-চার ঘণ্টা লেগে যায়।’
এ প্রসঙ্গে তিতাস গ্যাস কতৃপক্ষ জানায়, শীতে রাজধানীর বিভিন্ন ‘পকেট’ এলাকায় প্রতিবছরই গ্যাস সরবরাহ কমে যায়। যেসব এলাকায় বিতরণ লাইনের তুলনায় গ্রাহক বেশি সেসব এলাকায় গ্যাসের চাপজনিত সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। তবে সম্প্রতি চাহিদার তুলনায় গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সব এলাকায় নতুন ভোগান্তির শুরু হয়েছে।
রাজধানীতে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানি তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মির্জা মাহবুব হোসেন সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘এলএনজির সরবরাহ কমে গেছে। তাই চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ কমে যাওয়ায় চাপজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘তিতাস এলাকায় ২২০০ এমএমসিএফডি গ্যাসের প্রয়োজন হয়। মাঝখানে ১৯০০ এমএমসিএফডি, পরে ১৭০০ এমএমসিএফডিতে নেমে এসেছে। কাতার থেকে এলএনজি আসতে দেরি হওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’
তবে কবে এ সমস্যার সমাধান হবে তা তিনি জানাতে পারেননি।
তাই শীতে রাজধানীবাসীর যেন নাভিশ্বাস এই গৃহস্থালী ভোগান্তিতে। কবে এর সমাধান হবে তার নিশ্চয়তাও নেই। প্রায়ই বাসযোগ্য শহরের প্রতিশ্রুতি দেন ক্ষমতাসীন পদে থাকা শহর নিয়ন্ত্রকরা। তবে তা থাকছে কথার ফুলঝুড়ি হয়েই। ‘ঢাকা শহর আইস্যা আমার আশা ফুরাইছে…’ সিনেমার এ গান যেন বাস্তব হয়ে ধরা দিচ্ছে নাগরিকদের নিত্যদিনে।