fbpx

রূপপুরে দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লির উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনকাজের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটের দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক চুল্লি স্থাপন উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মনে করি আজকে বাংলাদেশের জন্য বিরাট অর্জনের দিন হিসেবেই আমাদের ইতিহাসে এটা স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।’

২০২৩ সালে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ প্রায়ই শেষ হয়ে এসেছে। হয়তো ২০২৩ সালের মধ্যেই প্রথম যে ইউনিট, সেখান থেকে হয়তো বিদ্যুৎ সরবারহ সম্ভব হবে। আমি সবাইকে বলব, দোয়া করেন, যেন এটা আমরা করতে পারি। ২০২৪ সালের মধ্যে দ্বিতীয় ইউনিটও চালু হওয়ার আশা রাখি।’

এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে কোনো ঝুঁকি নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে পরমাণু শক্তি থেকে যে বিদ্যুৎটা আসবে, এখন যেমন জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে সবাই উদ্বিগ্ন, আমাদের কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো রকম অ্যামিশন (নির্গমন) হবে না। কোনো রকম পরিবেশের ওপর প্রভাব পড়বে না। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে এটা মানুষকে দিতে পারব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। তা আমাদের দেশের কোনো রকম ক্ষতি করবে না; বরং আমাদের মানুষ খুব স্বচ্ছ একটা বিদ্যুৎ পাবে এবং যে বিদ্যুৎ তাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট অবদান রেখে যাবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তির ব্যবহারটা মানুষের কল্যাণের জন্য, কিন্তু এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটা নির্মাণ এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ। সে জন্য লোকবল সৃষ্টি করা, তাদের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা এবং তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, অনেকগুলো বিষয়ে সেখানে থাকে, যেটা নিয়ে আমরা দীর্ঘ আলোচনা করি এবং আমরা ব্যবস্থা নিই।’

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শুরু করার আগে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনাগুলোকে আমলে নেয়া হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমেরিকার থ্রি মাইল আইল্যান্ড, রাশিয়ার চেরনোবিল, জাপানের ফুকুশিমা—যে সমস্ত দুর্ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলো মাথায় রেখে ভবিষ্যতে আমাদের এখানে যাতে কোনো রকম এ ধরনের দুর্ঘটনা না ঘটে, সে ব্যবস্থা আমরা নিই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই বিদ্যুৎকেন্দ্র শুধু বিদ্যুৎকেন্দ্র না, আপনাদের এ কথাটা মনে রাখতে হবে নিউক্লিয়ার পাওয়ার, এই শক্তিটা, এর যে ব্যবহারটা শান্তিপূর্ণভাবে উন্নয়নের জন্য, সে একটা দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ স্থাপন করেছে বিশ্বব্যাপী। এটা সবার মাথায় রাখতে হবে যে, আমাদের দেশে সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, ট্রেনিং দিয়ে এটা করে যাচ্ছি।’

রূপপুর পাওয়ার প্রজেক্ট থেকে যে বিদ্যুৎ আসবে আমাদের উত্তরবঙ্গের মানুষ, যেখানে চিরদিন মঙ্গা লেগে থাকত, দুর্ভিক্ষ লেগে থাকত, এই যে আশ্বিন-কার্তিক মাস আসলে সেখানে দুর্ভিক্ষ হতো, এখন সেগুলো আমরা দুর্ভিক্ষ মুক্ত তো করতে পেরেছি, তারপর তো কর্মসংস্থানের জন্য বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। সেখানকার মানুষের আরও বেশি সুযোগ সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের —জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন। গত বছরের ১০ অক্টোবর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের পারমাণবিক চুল্লি বা নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন শুরু হবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply