করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি অনুমতি ছাড়া তোলার অভিযোগে সচিবালয়ে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তাকে শাহবাগ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
সোমবার (১৭ মে) রাত সাড়ে ৮টায় সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানা পুলিশের একটি টিম সচিবালয় থেকে নিয়ে যায়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব সিব্বির আহমেদ তার বিরুদ্ধে সরকারি নথিপত্র সরানোর অভিযোগ দায়ের করেছেন।তার বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন রমনা জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার এম এম শামীম।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য কর্মকর্তা মাইদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অনুমতি ছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের সরকারি নথির ছবি তোলার অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সোমবার রাতে প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানানো হয়, ‘সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম সচিবালয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যান। সেখানে বিকেল তিনটার দিকে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাকে একটি কক্ষে আটক করেন এবং তার মুঠোফোন কেড়ে নেওয়া হয়। আটক অবস্থায় সাংবাদিক রোজিনা একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওই ভবনে যান। রোজিনাকে আটকে রাখার কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমকর্মীরা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা কিছুই জানাননি। বিকেলে সাংবাদিকেরা সচিবালয়ের বাইরে জড়ো হয়ে রোজিনা ইসলামকে হেনস্তা ও আটকে রাখার প্রতিবাদ করেন। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনা ইসলামকে শাহবাগ থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রোজিনা ইসলামকে ৯টার দিকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।’
রোজিনার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিভিন্ন সময়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পরিকল্পিতভাবে রোজিনা ইসলামকে ফাঁদে ফেলা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় আনা হয়েছে।
এদিকে, সোমবার রাতে সাংবাদিকেরা শাহবাগ থানার ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। রোজিনা ইসলামকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান তারা। এ ঘটনায় সাংবাদিকেরা স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে মন্ত্রী–সচিবের পদত্যাগ দাবি করেন। রাত সাড়ে ১১টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছিল।