জাপান ফুকুশিমা পারমাণবিক প্ল্যান্ট থেকে ভূগর্ভস্থ টানেলের মাধ্যমে ফুকুশিমায় প্রশান্ত মহাসাগরে বিতর্কিত তরল বর্জ্য নিষ্কাশন শুরু করেছে। এরপর থকেই এই অঞ্চলে বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। জাপানের শিশুদের স্কুলে পাথর নিক্ষেপ, বয়কটের হুমকি এবং শত শত রাগান্বিত ফোন কলের মতো কিছু উপায়ে গত কয়েক সপ্তাহ চীনা জনগণ জাপানের প্রতি তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
চীন জাপান থেকে সামুদ্রিক খাবারের সবচেয়ে বড় ক্রেতা এবং সম্প্রতি তারা সব ধরনের আমদানি বন্ধ করবে বলে জানিয়ে দিয়েছে। চীন, দুই বছর আগে পরিকল্পনাটি ঘোষণা করার পর থেকেই সোচ্চার হয়েছে। এই পানি নিষ্কাশনকে অত্যন্ত স্বার্থপর এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ বলে অভিহিত করেছে ।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই প্রতিক্রিয়াগুলো এশিয়ার ভূ-রাজনীতি দ্বারা অনুপ্রাণিত। বেইজিংয়ের সাথে টোকিওর সম্পর্ক সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবনতির দিকেই ছিল। কারণ জাপান কয়েক বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এবং চীনের দাবি করা স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে সমর্থন করে।
২০১১ সালে সুনামিতে ফুকুশিমা পারমাণবিক প্ল্যান্ট ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর থেকে, পাওয়ার প্ল্যান্ট কোম্পানি টেপকো চুল্লির জ্বালানী রডগুলিকে ঠান্ডা করার জন্য পানিতে পাম্প করছে। আর প্রতিদিন সেই দূষিত পানি পরিশোধন করার পর বিশাল সবঢ়ট্যাংকে সংরক্ষণ করা হয়। আর পরমাণু কেন্দ্রে সঞ্চিত এই এক মিলিয়ন টন পানিই আগামী ৩০ বছরে সাগরে নিষ্কাশন করা হবে।
তবে বাস্তবতা হচ্ছে পারমানবিক চুলার এই পানিতে উচ্চ মাত্রার তেজস্ক্রিয় পদার্থ ট্রিটিয়াম এবং কার্বন -14 রয়েছে যা পানিথেকে সরিয়ে নেয়া কঠিন। জাপানের সমাধান হ’ল এটিকে সমুদ্রে ছাড়ার আগে সমুদ্রের পানি দিয়ে পাতলা করা।
এদিকে জাপান বলছে এই বর্জ্য আসলে নিরাপদ এবং জাপানের সাথে বিশ্বের অনেক বিজ্ঞানীও একমত। এমনকী জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থাও জাপানের এই পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। তবে সমালোচকরা বলছেন যে, এটি নিয়ে আরও গবেষণা করা দরকার এবং এই বর্জ্য নিষ্কাশন আপাতত বন্ধ করা উচিত।