জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে ডাকা সমাবেশে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লাঠিপেটার অভিযোগ এনে মামলা করেছে পুলিশ।
ওই মামলায় বেআইনি ও পূর্বপরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেলসহ পুলিশের কাজে বাধা দেওয়াসহ হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমণ করে গুরুতর রক্তাক্ত ও হাড়ভাঙা জখমের অভিযোগ আনা হয়েছে সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
মামলায় বাম ছাত্রসংগঠনের ২২ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ২০-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
৮ আগস্ট (সোমাবার) রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুদ হাওলাদার।
এর আগে গতকাল রবিবার জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো বিক্ষোভ সমাবেশে করে।
শাহবাহ থানা সূত্রে জানা যায়, গতকালের ঘটনায় ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২০-৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে৷ এদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সহসভাপতি অনিক রায়কে এই মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
এছাড়া ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সোহেল, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সভাপতি আরিফ মঈনুদ্দীন, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি সুনয়ন চাকমা, বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সভাপতি তৌফিকা প্রিয়া, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়দীপ ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ইউনিয়নের সদস্য শান্তা ও ছাত্র ফেডারেশনের জুবা মনিকেও আসামি করা হয়েছে। এজাহারে অন্য ১২ জনের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি
মামলার এজাহারে বলা হয়, শাহবাগ মোড়ে ডিএমপির রমনা অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার হারুন অর রশীদ, সহকারী কমিশনার বায়েজীদুর রহমান, সহকারী কমিশনার (প্যাট্রল) বাহা উদ্দীন ভূঞা, শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার, পরিদর্শক (নিরস্ত্র) গোলাম মোস্তফা পুলিশ বাহিনীকে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছিলেন। গতকাল রোববার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার সময় জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা বিনা অনুমতিতে বেআইনিভাবে শাহবাগ মোড়ের পাকা রাস্তার ওপর বিক্ষোভ সমাবেশ করার নামে রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করেন। পুলিশ তাঁদের রাস্তার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার অনুরোধ করে। কিন্তু আসামিরা অনুরোধ ও নিষেধ অমান্য করেন। এজাহারে থাকা আসামিরা মিছিল ও স্লোগানের মাধ্যমে হাতে লাঠিসোঁটা ও ইটপাটকেলসহ ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। পুলিশ তাঁদের রাস্তা থেকে সরে যেতে অনুরোধ করে৷
পরে বিক্ষোভকারীদের লাঠির আঘাতে উপপরিদর্শক রাশেদুল আলম আহত হন। পরে পুলিশ নিজেদের জানমাল ও জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লাঠিপেটা করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়৷ ঘটনাস্থল থেকে বিক্ষোভকারীদের ব্যবহৃত তিনটি বিভিন্ন আকারের বাঁশের লাঠি, সাতটি বিভিন্ন আকারের কাঠের লাঠি জব্দ করা হয়েছে৷
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার জানান এই মামলার মামলার বাদী থানার উপপরিদর্শক পলাশ সাহা।