২০২১ সালে ২৮ অক্টোবর ক্রুজে অনুষ্ঠিত এক পার্টিতে গিয়ে এনসিবি’র হাতে ধরা পড়েছিল শাহরুখ পুত্র আরিয়ান খান। আপাতত ড্রাগ মামলায় থেকে মুক্তি পেয়েছে আরিয়ান। এই মামলায় আরিয়ানের বিরুদ্ধে প্রধান তদন্তকারী অফিসার ছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে৷ আপাতত আরিয়ান মামলায় চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন সমীর। জানা যায়, আরিয়ান খান ড্রাগ মামলায় কিং খানের কাছ থেকে ২৫ কোটি রুপি চাঁদদাবাজির চেষ্টা করেছেন এই অফিসার৷ খবর দ্য হিন্দুস্তান টাইমস।
কোনভাবেই নিজেকে নির্দোশ প্রমাণ করতে পারছেন না সমীর৷ একের পর এক অভিযোগে বিদ্ধ এই অফিসার। এবার নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে আদালতে গোপন চ্যাটের বিবরণ জমা দিলেন সমীর৷ শাহরুখের সঙ্গে কথোপকথনের সমস্ত কিছু তুলে দিলেন তিনি। বাদশার পাঠানো একাধিক হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের স্ক্রিনশট মুম্বাই হাইকোর্টে জমা দেন প্রাক্তন এনসিবি আধিকারিক। সমীরের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট ভাইরাল হতেই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
ভাইরালও হওয়া চ্যাটে দেখা যাচ্ছে, শাহরুখ খান একাধিকবার তদন্তকারী অফিসারকে মেসেজ করেছেন। যেখানে লেখা রয়েছে, আরিয়ানকে দয়া করে জেলে ভরবেন না। এটা ওর স্পিরিটকে একদম ভেঙে দেবে৷ অন্য একটি মেসেজে শাহরুখ লিখেছেন, সমীর সাহেব আপনার সঙ্গে একমিনিট কথা বলতে পারি৷ প্লিজ, আমি জানি এটা হয়তো অফিসিয়ালি ঠিক নয়, হয়তো পুরোপুরিভাবেই এটা করা অনুচিত। কিন্তু বাবা হিসেবে যদি আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারতাম৷ প্লিজ, লাভ শাহরুখ।
শাহরুখ অন্য মেসেজে আরও লেখেন, প্লিজ ওদেরকে একটু বোঝান। আমার ছেলেকে বাড়ি নিয়ে যেতে দিন। আমি আর কী বা বলব, শুধু ভিক্ষা চাইতে পারি। আপনি তো আমার আচরণ দেখেছেন। আপনি যা করছেন আমি তার বিরুদ্ধে নই। আপনি যখন বলেছেন, আরিয়ানকে আপনি নিজের মনে করে ওকে একটা ভাল মানুষ হিসেবে গড়তে চাইছেন। আমি কোনও প্রেসের কাছে যাইনি, কোনও বিবৃতি দিইনি। আমি আপনার উপর আস্থা রেখেছি, বাবা হিসেবে আমাকে আর হতাশ করবেন না।
শাহরুখের এই মেসেজ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে বি-টাউনে। কিন্তু ওয়াংখেড়ের এই চ্যাট ফাঁস ভালোভাবে নেয়নি মুম্বাই হাইকোর্ট। হাইকোর্টের দাবি, ‘আপনি আদালতের সামনে আছেন। যখন বিষয়টি বিচারাধীন, আপনি কেন হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট প্রকাশ করলেন?’
রবিবার(২১ মে) এনসিবি’র আধিকারিকরা স্বীকার করেছেন যে খোলা আদালতে চ্যাটগুলি প্রকাশ করা নিয়মের লঙ্ঘন কারণ তদন্তকারী অফিসারের অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যদের সাথে কথোপকথনে জড়িত হওয়া উচিত নয়। তবে ওয়াংখেড়ের পরবর্তী সুরক্ষাও বাড়িয়েছে।
ওয়াংখেড়ে কখনই কথোপকথনের বিষয়ে তার সিনিয়রদের অবহিত করেননি বা তিনি যে মোবাইল ফোনে এসআরকের সাথে চ্যাট করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন সেটি তিনি আদালতে সমর্পণও করেননি আগে।
ওয়াংখেড়ে তার বিরুদ্ধে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের মামলা বাতিল করার জন্য মুম্বাই হাইকোর্টের কাছে যাওয়ার পরে চ্যাটগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। সিবিআই এই অফিসারের বিরুদ্ধে ২৫ কোটি রুপি ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করেছে, যার মধ্যে ৫০ লক্ষ রুপি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
এদিকে, ওয়াংখেড়ে আজ(২২ মে) দাবি করেছেন, তিনি গত ৯৬ ঘন্টায় একাধিকবার মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন।