চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভারী হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিবেশ। ধীরে ধীরে লাশের স্তুপ আরও দীর্ঘতর হচ্ছে। আহতদের সংখ্যাও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে । পরিস্থিতি সামাল দিতে ডাক্তাররা দম ফেলার ফুসরাতটুকু পাচ্ছেন না।
হাসপাতালের করিডোরে স্বজনদের খুঁজতে মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। আহতদের চিকিৎসা দিতে জরুরি ভিত্তিতে রক্তের দরকার হচ্ছে। স্থানীয় রক্তদাতা ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবো সংগঠন রক্ত দিতে এগিয়ে আছে। এছাড়া ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘রক্ত চাই’ পোস্ট দিতে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে।
চিকিৎসকরা জানিয়েছে, পজিটিভ গ্রুপের রক্ত নিয়ে তেমন সংকট এখন পর্যন্ত হয়নি। অনেক রক্তদাতা পাওয়া গেছে যারা মেডিকেল গিয়ে ও ব্লাড ব্যাংকে রক্ত দিয়েছেন। তবে নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের সংকট রয়েছে।
শুধু তাই নয়, রাত ভর মাইকিংও চলেছে নেগেটিভ রক্ত চেয়ে। যে যেভাবে পারছে, এগিয়ে এসেছে। মাঝরাতে গাউছিয়া কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম বাবুকে নেগেটিভ রক্তের জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে হ্যান্ড মাইক হাতে মাইকিং করতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে ইতোমধ্যে দুই শতাধিক আহত রোগী ভর্তি হয়েছে। তাদের জন্য প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। বিশেষ করে নেগেটিভ রক্ত। তাই আমরা ও নেগেটিভ, বি নেগেটিভ, এবি নেগেটিভ রক্তের জন্য মাইকিং করছি।’
এদিকে আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতে শহরের সব সরকারি-বেসরকারি চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে একে একে আনা হচ্ছে আহতদের। অ্যাম্বুলেন্স থেকে শুরু করে সিএনজিচালিত অটোরিকশাতে করেও হতাহতদের আনা হচ্ছে। আহত সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। দগ্ধদের চিকিৎসায় সব চিকিৎসককে হাসপাতালে আসার নির্দেশ দিচ্ছি। আপনারা শুধুমাত্র অ্যাপ্রোন পরে চলে আসুন।’
রোগীদের হাসপাতালে পরিবহনে সব অ্যাম্বুলেন্সকে নগর থেকে সীতাকুণ্ডে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান এ অবস্থায় হাসপাতালের সব ইন্টার্ন চিকিৎসককেও কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।