fbpx

সেতু হারানোর শোক

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মিডিয়ার পরিচিত নাম আদিত্য কবির। যদিও তার ডাক নাম সেতু। সৃজনশীলদের আড্ডায় মধ্যমণি হয়ে থাকা মানুষটি আর নেই। বুধবার দিবাগত রাতে স্ট্রোক করে মৃত্যু হয় এই কবি, লেখক ও বিজ্ঞাপন ব্যক্তিত্বের।

পেশাগত জীবনে তিনি বিজ্ঞাপনী সংস্থা এশিয়াটিকের অ্যাসোসিয়েট ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে যুক্ত ছিলেন। তিনি ছিলেন কুসুমিত ইস্পাতের কবি হ‌ুমায়ূন কবিরের ছেলে। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে আদিত্য কবির ছিলেন বড়। অদিতি কবির ও অনিন্দ্য কবির নামে তার এক ভাই এক বোন রয়েছেন। দৈনিক ভোরের কাগজে সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।

তার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর শোক প্রকাশ করছেন গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেকেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখক ও শিক্ষক আজফার হোসেন লিখেছেন, ‘আমার এক সময়ের খুব কাছের মানুষ ও আমার প্রিয় মানুষ আদিত্য কবির–অসাধারণ মেধাবী কবি ও লেখক আদিত্য কবির–অল্প বয়সেই চলে গেল! ডেভাস্টেটিং! গুছিয়ে যে কিছু বলব, সেটা সম্ভব হচ্ছে না এখন!’

সাংবাদিক জ.ই. মামুন লিখেছেন, ‘এমন বিদায় চাইনি বন্ধু, এভাবে- এত আগে না গেলেও পারতে! আদিত্য কবির আমার বন্ধু, আমার সহকর্মী, আমার দুঃসময়ের সঙ্গী, কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমার গুরুও। ওর কাছ থেকে কতকিছু শিখেছি। আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে মেধাবী যে কজন ছেলে মেয়ে আমি চিনি, আদিত্য তাদের অন্যতম। তার মতো ভালো বাংলা এবং ইংরেজি লিখতেও দেখেছি কম মানুষকে। কমিউনিকেশন স্কিল ছিলো অসাধারণ।’

সাংবাদিক প্রভাষ আমিন লিখেছেন, ‘আমাদের প্রজন্মের সবচেয়ে মেধাবী মানুষ, আমার প্রিয় বন্ধু আদিত্য কবির মারা গেছে। খবরটি আমার জন্য খুবই বেদনার, শোনার পর আমার বিশ্বাস হয়নি, এখনও হচ্ছে না। শোকের ধাক্কা আমার কাটেনি এখনও।’

নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী লিখেন, ‘আমাদের বন্ধুদের মধ্যে অনেক বিষয়েই আগানো ছিলো আদিত্য, যারে লোকে আদিত্য কবির নামে জানতো! চলে যাওয়ার ক্ষেত্রেও দেখা গেলো ও-ই আগানো! আদিত্য’র কথা ভাবলে দেখতেছি আমার শীতের কথাই মনে পড়তেছে! এমন না যে, আমাদের শাহবাগের দিনগুলা কেবল শীতেরই ছিলো! তারপরও আজকে কেবল শীতের সন্ধ্যায় শিশিরে পা ডুবাইয়া হাঁটার কথা মনে পড়তেছে! হাঁটতে হাঁটতে উদ্যান, নজরুল, মোল্লা, হাকিম, জিমনেশিয়াম, কাঁটাবন, আজিজ, লাইব্রেরি, রোকেয়া, শামসুন্নাহার, মল, মধু, আইবিএ, বাবুল, দোয়েল সব পার হইয়া আদিত্য দুনিয়ার বাইরেই চইলা গেলো!!!! হোয়াট দ্য হেল, আদিত্য!’

নির্মাতা আকরাম খান লিখেন, ‘আদিত্য আমার বন্ধু। আমরা এত ঘনিষ্ঠ ছিলাম যে রেবু আন্টি আদিত্যর খোঁজ নিতে সবসময় আমাকে ফোন দিতো। আদিত্যকে নিয়ে কোনো সলাপরামর্শের জন্যেও আমার সাথে কথা বলতো। আদিত্যর সাথে আমার অনেক স্মৃতি। সেই স্মৃতিতে মিলেমিশে আছে গোলাম ফারুক ভাই, সাবটেক্স, ধানমন্ডি লেক, রেবু আন্টি, অঞ্জন দা, আমাদের ধানমন্ডী ২৬ নম্বরের ফ্ল্যাট, আদিত্যদের ঢাকা ইউনিভারসিটি কোয়ার্টার আরো কত জায়গা, আরো কত মানুষ। আদিত্য কোথাও থাকা মানে এডভেঞ্চার শুরু পার্টি ওন। আমার সবচেয়ে বেশি মনে পড়ছে আদিত্যর শিশুর মতো নির্মল হৃদয়টার কথা। যে হৃদয় তার সব বন্ধুর সব প্রচেষ্টার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য সহায়ক সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা। যেই কবিতাই লিখি বা নির্মাণ করি চলচ্চিত্র,বন্ধুমহলের কয়েকজন পাঠক-দর্শক মাথায় থাকে। সেই বন্ধুরা আড্ডার আসর ছেড়ে এক এক করে চলে যাচ্ছে। কার জন্য কাদের জন্য শিল্পের ছলনায় কিছু গোপন ইঙ্গিত রেখে যাবো বুঝতে পারছিনা। বিদায় বন্ধু আদিত্য।’

কবি সাখাওয়াত টিপু লিখেছেন, ‘আদিত্য কবিরের অকালে চলে যাওয়া সত্যিই অবিশ্বাস্য। বহুদিন দেখা নাই। আমাদের প্রজন্মের একজন উজ্জ্বল প্রতিভা ছিল আদিত্য কবির!’

সাংবাদিক তুষার আবদুল্লাহ লিখেছেন, ‘অভিমান করে ঘুমের মধ্যে একদম যেন টিলোএক্সপ্রেস খেলার মতো চলে গেলেন। ভালই করলেন হয়তো …নষ্টপুরে কেন জীবনের অপচয়!’

৯ ডিসেম্বর রাতে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করার কথা রয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply