fbpx

সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কাটাবেন কীভাবে?

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

বর্তমান সময়ে ফেসবুক বা অন্য কোনো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়! আর ফেসবুক বা এসব মিডিয়ার নিউজফিড স্ক্রল করলেই দেখা যায় একের পর এক খারাপ খবর। মাঝে মাঝে এসব পোস্ট দেখে হতাশায় ডুবে যায় অনেকেই। কিছু কিছু পোস্ট আবার চাইলেও এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। যার রেশ থেকে যায় আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও।

তবে কয়েকটি উপায়ে সোশ্যাল মিডিয়ার এই হতাশা থেকে দূরে থাকা সম্ভব বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিজে যদি সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে চান, নিম্নলিখিত উপায়গুলোর মধ্যে যে কোনো একটি বেছে নিতে পারেন।

বেশি ব্যবহৃত অ্যাপ থেকে দূরে থাকুন
এখনকার তরুণ প্রজন্ম একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে থাকে। তাই আপনি কোন অ্যাপটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছেন, সেটি জানতে ‘মোমেন্ট’ অ্যাপটি ডাউনলোড করুন। আপনি যদি আইফোন ইউজার হন, তাহলে বিল্ট ইন স্ক্রিন টাইম ফিচারটি ব্যবহার করতে পারেন। ফলে আপনি কোন অ্যাপে কতো সময় ধরে ব্যয় করেছেন, তা জেনে নিতে পারবেন। ফিচারটি তা জানিয়ে দেবে। পরে আপনার কাছ থেকে সেই অ্যাপকে দূরে রাখুন।

ডিলিট অ্যাপ
কখনো কি ভেবে দেখেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়া জীবনটা কত সুন্দর! এই ঝঞ্ঝাট থেকে দূরে থেকে কত সুন্দরভাবে জীবন কাটানো সম্ভব? যদি কখনো চেষ্টা না করে থাকেন, তাহলে এখনই একবার চেষ্টা করতে পারেন। হাতে থাকা স্মার্টফোন থেকে সব সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাপগুলো ডিলিট করে দিন। অন্তত ১২ ঘণ্টা নিজের সাথে সময় কাটান। এরপর দেখবেন অ্যাপগুলো ব্যবহারের ইচ্ছা কমে যাবে।

নিজের মতো বন্ধু খুঁজে নিন
আপনি যদি মিডিয়ার আসক্তি কাটাতে চান, তাহলে এমন কিছু বন্ধু খুঁজে নিন, যারাও আপনার মতো এই আসক্তি কমাতে চায়। যাদের লক্ষ্য জীবনে উন্নতি করা। তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামুন। দেখুন, কে কতক্ষণ এই অ্যাপগুলো থেকে দূরে থাকতে পারে। প্রতিদিন নোট করে রাখুন, কতক্ষণ এভাবে থাকতে পারছেন। সপ্তাহ পার হলে নিজেই এর প্রভাব দেখতে পারবেন।

পরিবারকে সময় দিন
এখনকার সময় আমরা এই অ্যাপগুলো নিয়ে এতোই ব্যস্ত যে, কারো সাথে কথা বলার মাঝেও ফোন হাতে নিয়ে তা চেক করতে থাকি। যা অত্যন্ত অশোভনীয়। এই অভ্যাস বদলাতে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। মোবাইলকে নিজের থেকে দূরে রাখুন। পরিবারের শিশুদের সঙ্গে আড্ডা দিন, গল্প করুন।

রাবার ব্যান্ড দিয়ে বেঁধে রাখুন
ধরুন, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ করছেন। কিন্তু মনের অজান্তেই একটু পরপর বারবার মোবাইল চেক করছেন। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে চাইলে ফোনের মধ্যে রাবার ব্যান্ড প্যাঁচিয়ে রাখুন। ফলে ফোন ধরার সময় বাধা অনুভব করবেন এবং কাজে মন দিতে পারবেন।

লক প্যাটার্ন
আপনি আপনার লক স্ক্রিনে কিছু প্রশ্ন সেট করে রাখতে পারেন। যেমন-‘এখন কেনো? কিসের জন্য? আর কী?’ তাহলে দেখা যাবে, ফোন হাতে নেওয়ার পেছনে কী উদ্দেশ্য তা নিয়ে নিজেকে প্রশ্ন করতে পারবেন। আর ব্যবহার কমে আসবে।

মনোযোগ বাড়ান
আপনাকে আপনার জীবনের লক্ষ্য নিজেই নির্ধারণ করতে হবে। কোথায় আপনি মনোযোগ দেবেন আর কোথায় দেবেন না, সেটি আপনাকেই ঠিক করতে হবে। তাহলেই বুঝে নিন, কোথায় মনযোগ বেশি দিতে হবে।

যতদূর সম্ভব ফোন থেকে দূরে থাকুন
ধরুন, আপনি ঘুমাচ্ছেন। হুট করেই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলো। তখন মনের অজান্তেই আপনি ফেসবুকে ঢুঁ মারলেন। বুঝতেও পারবেন না, সময় কীভাবে কেটে যাচ্ছে। তাই ফোন দূরে রেখে ঘুমাতে যান। আর হাতের নাগালের বাইরে থাকলে বার বার ফোন হাতে নিতে মন চাইবে না।

টু ডু লিস্ট
প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর সারাদিন কী করবেন, তার একটি তালিকা তৈরি করুন। সেখানে নিজেকে সময় বেঁধে দিন, কতটুকু সময় ফেসবুকে কাটাবেন। এটি মেনে চলার চেষ্টা করুন।

অ্যাপ লিমিট
ফেসবুক, ইউটিউব, ইন্সটাগ্রামসহ বেশির ভাগ মিডিয়ায় সময় বেঁধে দেওয়া যায়, আপনি এই অ্যাপ কতক্ষণ ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া প্লে স্টোর থেকে ‘ফ্রিডম’ নামের একটি অ্যাপ নামিয়ে নিতে পারেন। যেখানে নির্দিষ্ট সময় পার হলে সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলো লক করে দেবে ‘ফ্রিডম’। আপনি হাজার চেষ্টা শত চেষ্টাতেও এই লক খুলবে না। আজই করে ফেলুন অ্যাপ লিমিট।

ফোল্ডার
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকতে সব অ্যাপগুলো একটি ফোল্ডারের ভেতরে ঢুকিয়ে দিন। হোম স্ক্রিনে যদি অ্যাপগুলো দেখতে না পান, মনের ভুলে অ্যাপ চালু করার প্রবণতা কমে আসবে।

মেডিটেশন
সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমাতে মেডিটেশনের বিকল্প কিছু নেই। ফলে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। তাই সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার ছাড়তে মেডিটেশন ভালো একটি বিকল্প হতে পারে।

তবে সবচেয়ে যে বিষয়টি জরুরি, সেটি হচ্ছে নিজের ইচ্ছা শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা। মনে রাখবেন, মানুষ পারে না এমন কিছুই নেই। তাই নিজের ইচ্ছাশক্তি বাড়ান, বিশ্বাস রাখুন নিজের ওপর।

Advertisement
Share.

Leave A Reply