ইউরোপের প্রথম দেশে হিসেবে মেয়েদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাবের সময় ছুটি দিতে যাচ্ছে স্পেন। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এ সংক্রান্ত একটি আইন দেশটির পার্লামেন্টে পাস হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীদের পিরিয়ডের ছুটি দেয়ার বিষয়ক আইনে স্পেনের পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়। এর পক্ষে ১৮৫টি ভোট পড়ে। আর বিপক্ষে পড়ে ১৫৪টি ভোট।
বিশ্বের অল্প কয়েকটি দেশে নারী কর্মীদের ঋতুস্রাবকালে ছুটি দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে আছে জাপান, ইন্দোনেশিয়া ও জাম্বিয়ার মতো কয়েকটি দেশ।
বিলটি পাস হওয়ার পর স্পেনের সমতা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইরিন মন্টেরো টুইটারে লিখেছেন, ‘নারীবাদের অগ্রগতির জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক দিন। একই সঙ্গে এতে নিষিদ্ধ বিষয় হয়ে থাকা ঋতুস্রাবের বিষয়টি প্রকাশে বাধা কেটে যাবে।
গত বছরের মে মাসে স্পেনের মন্ত্রিসভা এই আইন প্রাথমিকভাবে অনুমোদন দিয়েছিল। ইরিন মন্টেরো তখন বলেছিলেন, ‘ঋতুস্রাব আর কোনো নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ঋতুস্রাবকালে ব্যথা নিয়ে কাউকে আর অফিসে যেতে হবে না। এজন্য ওষুধ সেবন বা বিষয়টি গোপন করতে হবে না।’
নতুন আইনে বলা হয়েছে, যেসব নারী কর্মী মাসিকের সময় খুব ব্যথা বা অসুস্থতায় ভোগেন, তারা যত দিন প্রয়োজন ছুটি নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে নিয়োগকারী অর্থাৎ একজন নারী যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন, সেই প্রতিষ্ঠান তার ঋতুস্রাবকালীন ছুটি সাধারণ অসুস্থতাজনিত ছুটি হিসেবে হিসাব করতে পারবে না।
তবে শারীরিক অসুস্থতাজনিত অন্য কোনো কারণে ছুটি এর আওতায় পড়বে না। এসব ক্ষেত্রে ছুটি নিতে চাইলে কর্মীদের চিকিৎসকের পরামর্শপত্র (প্রেসক্রিপশন) দেখাতে হবে। তবে প্রতিবছর একজন কর্মী শারীরিক অসুস্থতার কারণে কত দিন ছুটি পাবেন, সে বিষয়ে অবশ্য নতুন এই আইনে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি।
স্পেনের গাইনোকোলজি অ্যান্ড অবস্টেট্রিকস সোসাইটির হিসাবে, ঋতুস্রাবের সময় দেশটির নারীদের তিন ভাগের এক ভাগ প্রচণ্ড ব্যথাজনিত অসুস্থতায় ভোগেন।
এদিকে এ আইনের বিরোধিতা করে স্পেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পপুলার পার্টি (পিপি) বলেছে, আইনটি নারীদের জন্য কলঙ্কজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ । এটি শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।