গোটা বছরজুড়ে লেবুর চাহিদা স্বাভাবিক থাকলেও রোজার এই মাসে এর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কেননা সারাদিন রোজা রেখে এক গ্লাস লেবুর শরবত মনকে যেমন পরিতৃপ্ত করে, অন্যদিকে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে। তাই মাসজুড়ে লেবুর কদর একটু বেশি।
কিন্ত দেশের বাজারগুলোতে লেবু যেন এক সোনার খনি। এর দাম এতোই বেশি, যা নিম্ন ও মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
রাজধানীর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় আকারে এলাচি লেবুর ডজন ২১০ টাকা। দুই ডজন নিলে ১০ টাকা কমিয়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছেন দোকানিরা। সে হিসেবে প্রতি পিস লেবুর দাম পড়ছে গড়ে ১৭ টাকা।
ক্রেতার কাছে চড়া দামে বিক্রি করেও হাসি নেই বিক্রেতার মুখে। বলছেন, ‘যে দামে আমি লেবু কিনেছি তাতে ২০০ টাকায় ডজন বিক্রি করেও খুব বেশি লাভ হচ্ছে না।’
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার খুচরা বাজারে বড় আকারের এক হালি এলাচি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। সে হিসেবে প্রতি পিস লেবুর দাম পড়ছে গড়ে ১৭ দশমিক ৫০ টাকা।
রাজধানীর জিগাতলা, ধানমন্ডি, কাঁঠালবাগান ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে খুচরা বাজারে এলাচি লেবুর হালি ৪০, ৫০ ও ৭০ টাকা। আর পাইকারি দামও অনেকটা একই। কারওয়ান বাজারে পাইকারি বিক্রেতারাও প্রতি হালি এলাচি লেবু বিক্রি করছেন সর্বোচ্চ ৬০ টাকায়।
এলাচি লেবুর বাইরে বাজারে সাধারণত কলম্বো, কাগজি ও টাঙ্গাইলের বিচিহীন লেবু পাওয়া যায়। তবে বাজারে এখন এলাচি লেবুর সরবরাহই বেশি। আর সুগন্ধি লেবু হিসেবে খ্যাত কলম্বো লেবুর সরবরাহ পর্যাপ্ত আছে। বাজারে এই লেবুর হালি ৫০ টাকা।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মূলত চাহিদা বেশি থাকায় লেবুর দাম এতো বেড়ে গেছে। তবে আস্তে আস্তে এই দাম কমে আসবে।
সিলেটের শ্রীমঙ্গলে আড়তে ২ টাকার দামের লেবু খুচরা পর্যায়ে এসে ৮ থেকে ১০ টাকায় বিক্রি হয়। আর ঢাকায় এসে তা ১৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাতবদলেই খুচরা পর্যায়ে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকায়। ঢাকায় এসে সেই লেবুর দাম আরও বেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে লেবু চাষে প্রসিদ্ধ হচ্ছে সিলেট, চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, শেরপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চল। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় এসব অঞ্চল লেবু চাষের উপযোগী। তবে সমতলও পিছিয়ে নেই। ঢাকার পার্শ্ববর্তী নরসিংদী, উত্তরাঞ্চলের নাটোর কিংবা দক্ষিণের যশোরের মতো জেলায় এখন লেবুর চাষ বাড়ছে।