মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে গতকাল রবিবার একদিনেই মৃত্যু হলো আরো ৩৯ জনের। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরো অনেক। আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন চিকিৎসাকর্মীরা।
সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ শুরুর পর গতকাল রবিবার সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন পার করলো মিয়ানমার। দেশটির বিভিন্ন জায়গায় গতকাল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে বিক্ষোভকারীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রবিবার (১৪ মার্চ) মিয়ামারের শিল্প এলাকা হ্লাইংথায়াতে চীনের বেশকিছু কারখানায় হামলা চালানো হয়। সংঘর্ষে সেখানে ২২ বিক্ষোভকারী নিহত হন।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানায়, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিক্ষোভকারীরা মিছিল নিয়ে সড়কে এলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর গুলি চালায়। সেখানেই আরো ১৬ জন বিক্ষোভকারী নিহত হন। এ সময় সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যেরও মৃত্যু হয়।
দেশটির সেনা পরিচালিত টেলিভিশন জানিয়েছে, হ্লাইংথায়াতে চীনের বেশকিছু কারখানা রয়েছে। সেখানে চারটি গার্মেন্টস ও একটি সার কারখানায় আগুন দেয়া হয়। অনেক চীনা কর্মী সেখানে আহত অবস্থায় আটকে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি উদ্ধারের জন্য যেতে চাইলে প্রায় দুই হাজার বিক্ষোভকারী তাদেরকে বাধা দিয়ে রাস্তা আটকে দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফটো সাংবাদিক জানান, ‘এটা ছিল ভয়াবহ! আমার চোখের সামনে গুলি করে বিক্ষোভকারীদের মেরে ফেলা হয়েছে। যা আমার স্মৃতি থেকে কখনোই সরাতে পারবোনা।’
গতকাল একদিনে ৩৯ জনের মৃত্যুর পর আজ সোমবার দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালেতে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু, জান্তা সরকার সেখানে দু’টি এলাকায় সামরিক আইন জারি করেছে। তবে, জান্তা সরকারের এক মুখপাত্রের সাথে রয়টার্স বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এদিকে, চীনের কয়েকটি কারখানায় হামলার খবর পেয়ে চীনা কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে ও চীনের সম্পদকে রক্ষা করার জন্য মিয়ানমার সরকারকে পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।