পেটের মেদ নিয়ে অস্বস্তিতে ভোগেন না, এমন মানুষের সংখ্যা কম। একবার পেটে মেদ জমে গেলে তা ঝরানো যেনো মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। স্বাস্থ্যকর খাবার ও নিয়মিত ব্যায়ামে পেটের মেদ খুব সহজেই ঝরানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদেরা।
পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রিয়েল বিবিএস বাংলাকে বলেন, পেটের মেদের জন্য শুধুমাত্র উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবারই দায়ী নয়, বেশি ক্যালরিযুক্ত যেকোন খাবারও সমানভাবে দায়ী। সাধারণত অ্যালকোহল, মিষ্টি জাতীয় খাবার, ডুবো তেলে ভাজা খাবার, কোমল পানীয়, লাল মাংস (রেড মিট), স্যাচুরেটেড চর্বি ইত্যাদি পেটের মেদ বাড়িয়ে তোলার পেছনে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে।
নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম ও সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে পেটসহ শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে এবং না হতে সাহায্য করে। পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রিয়েল এ বিষয়ে বেশকিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
১. প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার যেমন, লাল চাল, লাল আটা, শাকসবজি ও ফলমূলজাতীয় খাবার রাখতে হবে।
২. দুধ-চিনিযুক্ত চা কফি পরিত্যাগ করতে হবে। গ্রিন টিতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা পেটের মেদ কমাতে খুব বেশি কার্যকর।
৩. আখরোট, কাঠবাদাম ও সামুদ্রিক মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। মেদ কমাতে সাহায্য করে।
৪. ঝাল খাবার পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করে। যেমন, দারুচিনি, আদা, গোলমরিচ এবং কাঁচামরিচ।
৫. কাঁচা রসুনের কয়েক কোয়া সকালবেলা চাবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। এই অভ্যাস পেটে মেদ জমতে দেবে না।
৬. ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে একটি পাতি লেবুর রস মিশিয়ে পান করে। এতে শরীরের হজমপ্রক্রিয়া ভালো থাকবে এবং শরীরে মেদ জমতে বাধা সৃষ্টি করবে। জিরা পানিও পান করা যেতে পারে। এটা হজমে সহায়তা করে এবং মেদ কমাতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
৭. সকালের নাস্তায় প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। এটি সারাদিন শক্তি যোগাবে এবং বাড়তি ক্যালরি গ্রহণের ঝুঁকি কমাবে।
৮. খাবার গ্রহণের পরপরই শুয়ে পড়া যাবে না। ২০ থেকে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি করে অন্তত এক ঘণ্টা পর বিছানায় যাওয়ার অভ্যাস করুন।
৯. দীর্ঘ সময় একটানা বসে থাকা যাবে না। ৩০ মিনিট পরপর উঠে ১০ মিনিট হেঁটে আসতে হবে। দীর্ঘসময় বসে থাকলে পেটে খুব সহজেই মেদ জমে যায়।
১০. অতিরিক্ত চিন্তা বা কম কায়িক পরিশ্রমের ফলেও শরীরে মেদ জমে। তাই দিনের কিছু অংশ কায়িক পরিশ্রম হয় এমন কাজ অথবা ব্যায়াম অথবা হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
১১. একেবারে পেট ভরে অতিরিক্ত খাবার গ্রহণ করা যাবে না। বারেবারে অল্প পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।
১২. খাবারের আগে পানি পান অতিরিক্ত খাওয়ার আগ্রহকে নষ্ট করে দেয়, ফলে পেটে চর্বি জমতে দেয় না।
১৩. অনিয়মিত ঘুম ও স্বল্প ঘুম ওজন বাড়াতে পারে। প্রতিদিন রুটিন করে কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।
১৪. চিনিকে বলা হয় হোয়াইট পয়জন। তাই চিনি ও মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। এটি শুধু পেটের মেদ নয়, শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে।
যাদের কোনভাবেই ওজন নিয়ন্ত্রণে আসছে না বা পেটের মেদ কমছে না তাদেরকে একজন পুষ্টিবিদের সাথে পরামর্শ করে ডায়েট চার্ট ফলো করতে হবে একইসঙ্গে প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে ব্যায়ামের পরামর্শ দিয়েছেন পুষ্টিবিদ তাসরিয়ার রিয়েল।