যুদ্ধ শেষ হয়েও যেন হলোনা শেষ। ৭১-রের যুদ্ধ শেষ করলেও জীবন যুদ্ধের মাঠে এখনো লড়াই করে যাচ্ছেন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান। যুদ্ধকালীন গোলার আঘাতে আহত হন তিনি, আকেজো হয়ে যায় শরীরের বাম পাশ। তারপর থেকেই বিছানায় দিন-যাপন মিজানুর রহমানের।
রাজধানীর চিড়িয়াখানা রোডে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের জায়গায় প্রায় ৩৫ বছর আগে পেয়েছিলেন সরকারি জমি। সেখনেই নিজস্ব উদ্যোগে ঘর করে থাকেন মিজানুর রহমান। মুক্তিযোদ্ধা ভাতায় চলছে চিকিৎসা খরচ। সংসার জীবনের চাকা চালানোর সমর্থ্য নেই এই বীর যোদ্ধার। দরিদ্র সংসারে সন্তানদের লেখাপড়া করানোর সামর্থও ছিলনা, তাই ফেরেনি সচ্ছলতা, নেই হাল ধরার কেউ। যে কটা টাকা ভাতা হিসেবে পান ওষুধ খরচেই চলে যায় বাকী খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হয়।
কারও সাহায্য ছাড়া চলাফেরাও করতে পারেন না। তাই জীবনের এই অন্তিম সময়ে এসে কেবলই পেছন ফেরা, স্মৃতি হাতরে বেড়ানো। আর শুধুই অপেক্ষা অন্তিম যাত্রার। মিজানুর রহমানের চোখ মুখ যেন সে কথা বলে।
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে এসেও আমাদের দেখতে হয় শুধু পুনর্বাসনের জন্য আজও সরকারের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন বহু আহত স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। যারা সক্ষম তারা নিজে ব্যবস্থা করে বেঁচেছেন। অথচ যুদ্ধাহতদের চোখে পানি, অন্তরে ক্ষোভ।
হারিয়ে গেছেন বীরদের অনেকেই, যারা বেঁচে আছেন হয়ত আগামী পাঁচ বা ১০ বছর পর এই বীরযোদ্ধাদের একটি বড় অংশকেও আমরা হারাব চিরকালের মতো।
যাদের রক্ত ও প্রাণের ত্যাগে স্বাধীন হলো দেশ, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা সবকিছুর ঊর্ধ্বে ও সবকিছুর আগে, তাদের পাশেই থাকুক বাংলাদেশ।