২০২১ সালে দেশের ইতিহাসে চা উৎপাদনে রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। দেশের ১৬৭ টি বাগানে গত বছরজুড়ে ৯ কোটি ৬৫ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর আগে ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ ৯ কোটি ৬০ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছিল। বাংলাদেশ চা বোর্ডের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম জানান, মহামারির সময়েও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা-বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। সরকারের আর্থিক প্রণোদনা, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের নিয়মিত তদারকি, বাগানমালিক ও শ্রমিকদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলামকেন্দ্র চালু রাখা, চা-শ্রমিকদের মজুরি, রেশন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
চা বোর্ডের চেয়ারম্যান জানান, উত্তরাঞ্চলে চা-চাষিদের চা আবাদবিষয়ক হাতেকলমে প্রশিক্ষণ ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমতলের চা-বাগান ও ক্ষুদ্র চা চাষে উৎপাদন এ বছর ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
করোনা মহামারির শুরুতে চা উৎপাদনে বেশ ধাক্কা লেগেছিল। তখন ৮ কোটি ৬৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়। তবে সে ধাক্কা সামলিয়ে এর পরের বছর নতুন রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ।
গত বিশ বছরে চা শিল্পের সাথে দেশের ১৮টি বড় শিল্প গ্রুপ যুক্ত হয়েছে। উদ্যোক্তারা পুরোনো চারা উঠিয়ে নতুন চারা লাগিয়েছেন, বিনিয়োগও বৃদ্ধি পেয়েছে আগের চেয়ে। নতুন চারার সেই ফল পাওয়া যাচ্ছে তিন থেকে চার বছর পর। এছাড়া বাগানকেন্দ্রিক সংস্কার কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকায় উৎপাদনে যোগ হচ্ছে নতুন রেকর্ড।
চা-বাগানের মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এম শাহ আলম বলেন, বছরের পর বছর ধারাবাহিকভাবে চা-বাগানে যে সংস্কার কার্যক্রম চলছে, তারই ফসল এ রেকর্ড উৎপাদন। নতুন চারা ও নতুন আবাদে উৎপাদন বেড়েছে। বছরের শুরুর দিকে চা উৎপাদনের প্রতিকূল আবহাওয়া থাকলেও পরে তা কেটে যায়। তাতেই রেকর্ড উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।
তবে মৌসুমের শুরুতে নিলামে চায়ের ভালো দাম পাওয়া গেলেও শেষ দিকে অনেক চায়ের প্রত্যাশিত দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। চায়ের ভালো দাম নিশ্চিত করা গেলে উৎপাদন আরও বাড়বে বলেও জানান তিনি।